—প্রতীকী চিত্র।
কালীপুজো, অন্নকূট আর ভাইফোঁটা। উৎসবের এই সময়ে প্রতি বছরই ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বাজারে। কালীপুজো শেষ হয়েছে। আজ, মঙ্গলবার অন্নকূট ও আগামী কাল বুধবার ভাইফোঁটা। আর এই দু’টি উৎসবের ক্ষেত্রেই মুখ্য ভূমিকায় থাকে সুখাদ্য। বৈষ্ণব উৎসব অন্নকূটে খাদ্যরূপী দেবতারই আরাধনা। অন্য দিকে, ভাইফোঁটা এমন এক সামাজিক উৎসব যার মধুরেণ সমাপয়েত নয়, বরং নান্দীমুখই হয় মিষ্টান্ন দিয়ে।
এ হেন জোড়া উৎসবের আগের দিনে বাজারদর কতটা চড়তে পারে, সে সহজেই অনুমেয়। যদিও বিক্রেতা জানাচ্ছেন, মাছ-মাংসের তুলনায় আনাজের বাজার বিরাট কিছু চড়েনি। চাষিরা জানাচ্ছেন, নতুন মরসুমি আনাজে ভরা খেত। এখন যত দিন যাবে, জোগানের পরিমাণ ততই বাড়বে। যেটুকু দাম চড়েছে আনাজের, সেটুকুও অন্নকূট বা ভাইফোঁটা উপলক্ষে সাময়িক বলেই দাবি তাঁদের।
সোমবারের বাজারে দাম বেশি ছিল টোম্যাটো এবং পেঁয়াজের। কম-বেশি ৮০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিক্রি হচ্ছে দু’টি। ধনেপাতা ১০০ টাকা। তবে মাছের বাজার রীতিমতো আগুন। ৫০০ টাকার কমে ভাইয়ের পাতে দেওয়ার মতো মাছ নেই বললেই চলে। ইলিশ, আর, চিতল মাছ হাজারের নীচে কথা নেই। পিছনেই ভেটকি, চিংড়ি, কই, পমফ্রেট। কিলোগ্রাম ৮০০ টাকার আশেপাশে। এমনকি, কুচো সোনাখড়কে ৬০০ টাকা কিলো দরে বিকোচ্ছে। মাছ বিক্রেতা বাদল হালদার বলেন, “বুধবার এই দাম আরও কিছুটা চড়বে বলেই মনে হচ্ছে।”
খাসির মাংস এ দিন ছিল ৭৫০ টাকা কিলোগ্রাম। তুলনায় মুরগির মাংস নাগালের মধ্যে— ১৭০-১৮০ টাকার আশেপাশে।
মিষ্টির বাজারও তথৈবচ। ৭-৮ টাকার নীচে এমনিতেই কোনও মিষ্টি নেই। পাঁচ নয়, মিষ্টির ন্যূনতম দাম হয়েছে ছ’টাকা। তবে ওই মিষ্টি ভাইয়ের পাতে দেওয়ার উপযুক্ত নয়। অন্য দিকে, ১০ টাকার মিষ্টির দাম বেড়ে হয়েছে ১২ টাকা। অনেকে অবশ্য দাম না বাড়িয়ে মিষ্টির সাইজে পুষিয়ে নিচ্ছেন। সব মিলিয়ে ভাইফোঁটার এই মিষ্টি মরসুমে পাত থেকে ক্রমশ কমছে রসগোল্লা, সন্দেশের মতো চিরকালীন মিষ্টি কিংবা অধরের সরপুরিয়া, নবদ্বীপের লাল দই, শান্তিপুরের নিঁখুতি, রানাঘাটের পান্তুয়া। মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী লালমোহন মোদক বলেন, “বাজারে গরুর দুধের দর ছিল ৪৫-৪৮ টাকা এবং মোষের দুধ ৭০-৮০ টাকার মধ্যে। অন্য উৎসবে যেহেতু কেনাবেচা ভাল হয়েছে, তাই ভাইফোঁটাতেও ব্যতিক্রম হবে না বলেই মনে হচ্ছে।”