ফাইল চিত্র।
গত বছর বিজয়া দশমীর দিন দুপুরে নিজের বাড়িতে সপরিবারে খুন হন জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানের বাসিন্দা শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল, তাঁর আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বিউটি পাল তাঁদের ছয় বছরের ছেলে অঙ্গন পাল। ঘটনার সাত দিনের মাথায় ঘটনার মূল অভিযুক্ত তথা বন্ধুপ্রকাশের গ্রামের বাড়ি সাগরদিঘির সাহাপুরের বাসিন্দা বন্ধুপ্রকাশের প্রতিবেশী বছর একুশের উৎপল বেহেরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়ির কাজের লোক জিয়াগঞ্জ লেবুবাগানের বাসিন্দা বছর চুয়াত্তরের সুধা দাসের সাক্ষ্যগ্রহণ হল মঙ্গলবার। এদিন ফার্স্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক সঞ্জয়কুমার শর্মার এজলাসে প্রায় ঘন্টা দেড়েক ধরে চলে সাওয়াল জবাব।
প্রঃ এ দিন উৎপলের আইনজীবী কৌশিক দে জানান, সাওয়াল জবাবের শুরুতে সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় কাজের লোক সুধা দাসকে প্রশ্ন করেন আপনি কি বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়িতে কাজ করতেন?
উঃ হ্যাঁ।
প্রঃ কত দিন ধরে কাজ করতেন?
উঃ ছয় দিন।
প্রঃ কী কাজ করতেন?
উঃ ঘর মোছা, কাপড় কাচা।
প্রঃ ঘটনার দিন কী হয়েছিল?
উঃ ঘটনার দিন আমি সকাল আটটার সময় কাজে গিয়ে প্রথমে বাসন মাজি। দুধওয়ালা দুধ দরজার সামনে রেখে দিয়ে চলে যায়। বাজার থেকে মাছ নিয়ে আসে বুড়োদা (বন্ধুপ্রকাশ পালের ডাক নাম বুড়ো)। আমি মাছ ধুই। তারপর বিউটি বৌদি বলে দুপুরে খেতে আসতে। তারপর আমি চলে যাই। আমি যাওয়ার সময় ওরা তিন জনই বাড়িতে ছিল। পরে শুনতে পাই ওরা খুন হয়েছে। তারপর আমি ওই বাড়িতে যাইনি।’’
এ বার প্রশ্ন শুরু করেন ঘটনায় অভিযুক্ত ও ধৃত উৎপল বেহেরার আইনজীবী কৌশিক দে
প্রঃ বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়ি জনবহুল এলাকায়?
উঃ হ্যাঁ।
প্রঃ বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়ির কাছাকাছি দুর্গাপুজো হয়?
উঃ অনেক দুরে (থেমে) ছ’টা বাড়ির পর।
প্রঃ বন্ধুপ্রকাশের বাড়ির ডানদিক বামদিক ও পেছনে কার কার বাড়ি আছে?
উঃ বাড়ির বাঁ দিকে একটা কৃষ্ণমন্দির আছে, পিছনে বুড়োদার মায়ের বাড়ি, ডানদিকে একটা ফাঁকা জায়গা, তার পাশে একটা বাড়ি আছে।
প্রঃ বন্ধুপ্রকাশের বাড়ির ডান পাশে ফাঁকা জায়গা তার পাশে রাস্তা তার পাশে এটা মসজিদ আছে? উঃ মসজিদ একটু দূরে আছে। প্রঃ মসজিদে কোনও লোক থাকে, আজান পড়া হয়?
উঃ দুটো লোক থাকে। আজান পড়া হয়।
প্রঃ পাশের রাস্তা দিয়ে লোকজন গাড়িঘোড়া চলাচল করে?
উঃ হ্যাঁ।
প্রঃ বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে লোক যাতায়াত করে গাড়িঘোড়া চলে?
উঃ গাড়িঘোড়া চলে না লোক যাতায়াত করে।
তারপরই কৌশিক দে আদালতের কাছে দাবি করেন সুধা দাস বন্ধুপ্রকাশের বাড়ির কাজের লোক নন। যদিও এই কথা শুনেই সুধা দাস এজলাসে দাঁড়িয়েই বলেন, ‘‘আমি কাজ করতাম।’’ এদিন সরকারি পক্ষের আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজ বন্ধু প্রকাশ পালের বাড়ির কাজের লোকের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। কাজের লোককে জিজ্ঞাসাবাদ করে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা গিয়েছে।’’