প্রতীকী ছবি।
কোভিড হাসপাতালে কাজে গাফিলতির অভিযোগে একের পর এক কোপ পড়ছে চিকিৎসকদের উপর।
দিন কয়েক আগেই কাজে গাফিলতির জন্য নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে শো কজ করা হয়েছিল। আর গত বুধবার কোভিড হাসপাতালে ডিউটিতে না-যাওয়ার জন্য শো কজের মুখে পড়লেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের দুই চিকিৎসক ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায় ও বিনোদ কুমার দাস।
নদিয়ার কোভিড চিকিৎসা পরিস্থিতি নিয়ে আপাতত অত্যন্ত কড়া অবস্থান নিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। কারণ, এই জেলায় করোনায় মৃত্যুর হার উদ্বেগজনক। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবারই জেলায় করোনায় মৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। তা নিয়েও স্বাস্থ্য দফতর চাপে রয়েছে। দিন কয়েক আগে এক ভিডিও কনফারেন্সে এ ব্যাপারে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা-সহ অন্য স্বাস্থ্যকর্তাদের উপস্থিতিতে উষ্মা প্রকাশ করেন স্বাস্থ্যসচিব। বাধ্য হয়ে জেলাশাসক বিভু গোয়েল চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করেন। সেখানে স্পষ্ট করে দেওয়া হয় যে, করোনা চিকিৎসায় কোনও রকম গাফিলতি মানা হবে না।
এই বৈঠকের পর দিনই নবদ্বীপ স্টেট জেনারেল হাসপাতালের ডাক্তার তপন বন্দ্যোপাধ্যায় সকাল সাতটার পরিবর্তে বিকেল চারটে নাগাদ ডিউটি করার জন্য কল্যাণী কার্নিভাল কোভিড হাসপাতালে যান। এর জন্য তাঁকে শো কজ করা হয়। এর রেশ কাটতে না কাটতে আরও দুই চিকিৎসক শাস্তির মুখে পড়েছেন।
বুধবার সকাল সাতটা থেকে কৃষ্ণনগরের গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালে ডিউটি ছিল ব্রজেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের। কিন্তু তিনি ডিউটিতে যাননি। তার উপর স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁকে ফোন করে জানা যায় যে, তিনি কৃষ্ণনগরেরই নেই। ডিউটি ফাঁকি দিয়ে কোনও অনুমতি না-নিয়েই তিনি ‘আউট অফ স্টেশন’ হয়েছেন। বুধবার রাতেই তাঁকে শো-কজের চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। রানাঘাট হাসপাতালের চিকিৎসক জয় বিশ্বাসকে ব্রজেশ্বরবাবুর ডিউটি করতে বলা হয়। তিনি রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ গ্লোকালে এসে রোগী দেখা শুরু করেন। একই অভিযোগ উঠেছে শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের আর এক ডাক্তার বিনোদ কুমার দাসের বিরুদ্ধেও। তাঁর ডিউটি ছিল বুধবার রাত সাতটা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা পর্যন্ত। তিনিও ডিউটিতে যাননি। বিনোদবাবুর অবশ্য দাবি, “কর্তাদের উপস্থিতিতেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, বৃহস্পতি থেকে রবিবার পর্যন্ত আমাদের কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করতে হবে। সেই মর্মে নির্দেশিকাও জারি হয়। পরে বুধবার যুক্ত হয়। এ দিকে এ দিনই শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে আমার অনকল ও জরুরি বিভাগে ডিউটি ছিল। সেখানে কয়েকজন রোগীর অবস্থা খরাপ হওয়ায় রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত সেখনেই থাকতে বা্ধ্য হয়েছিলাম।”
এ দিনই গ্লোকাল কোভিড হাসপাতালের নোডাল অফিসার পদ থেকে জবা ভট্টাচার্যকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁর পরিবর্তে এসেছেন মহেশগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ দীপনারায়ণ ভুঁইয়া। আর অ্যাসিস্ট্যান্ট নোডাল অফিসারের পদ থেকে সৌরভ সেনগুপ্তকে সরিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জেলা হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার গোলক মণ্ডলকে।