তাঁর ঘাড়েও দায়িত্ব, দাবি তাহেরের

বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রতকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলেন। ওই কেন্দ্রের মূল দায়িত্বে রয়েছেন করিমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমানে কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মহুয়া মৈত্র।

Advertisement

শুভাশিস সৈয়দ

করিমপুর শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

করিমপুর উপ-নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান তথা সাগরদিঘির বিধায়ক সুব্রত সাহাকে বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। কিন্তু সুব্রত একা নন, তাঁকেও একই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের সাংসদ তথা মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সভাপতি আবু তাহের।

Advertisement

বৃহস্পতিবার কলকাতায় তৃণমূল ভবনে দলীয় সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রতকে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলেন। ওই কেন্দ্রের মূল দায়িত্বে রয়েছেন করিমপুরের প্রাক্তন বিধায়ক, বর্তমানে কৃষ্ণনগরের সাংসদ তথা তৃণমূলের কৃষ্ণনগর জেলা সাংগঠনিক সভাপতি মহুয়া মৈত্র। কিন্তু সুব্রত এক বারের জন্যও আবু তাহের নাম উচ্চারণ না-করায় দলের অন্দরে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাহের। দুই নেতার মন কষাকষি শুরু হয়েছে বলে খবর।

শুক্রবার তাহের দাবি করেন, ‘‘ওই বৈঠকে দিদি মানস ভুঁইয়াকে খড়্গপুর যেতে নিষেধ করেন। তার বদলে করিমপুরে যেতে বলেন। তখন মহুয়া মৈত্র উঠে বলেন, ‘বাইরের কাউকে করিমপুরে প্রয়োজন নেই। আমরা জেলার লোকজন ভোট সামলে দেব’। এর পরেই সামনের সারিতে সুব্রতদা এবং আমাকে দেখে দিদি আমাদের দু’জনকে করিমপুরের উপনির্বাচনে বাড়তি দায়িত্ব নিতে বলেন।’’ সুব্রত অবশ্য বলেন, ‘‘দিদি যে তাহেরের কথা বলেছেন, তা আমি শুনিনি।’’

Advertisement

করিমপুর বিধানসভা আসনটি মুর্শিদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। গত লোকসভা নির্বাচনে ওই কেন্দ্রে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের আবু তাহের। তিনি আবার তৃণমূলের জেলা সভাপতিও বটে। করিমপুরের বিধায়ক মহুয়া সাংসদ হয়ে যাওয়াতেই আগামী ২৫ নভেম্বর সেখানে উপনির্বাচন হচ্ছে। বৃহস্পতিবার সুব্রত বলেন, ‘‘এর আগেও মহুয়া আমায় ফোন করে করিমপুরে যেতে বলেছিল। এ দিন দিদিও তাই বলেন। আমি যাব এবং দলের প্রার্থীকে জয়ী করতে সব রকম চেষ্টা করব।’’ তাহেরের আক্ষেপ, ‘‘সুব্রতদা সিনিয়র মানুষ। দিদি যে তাঁর সঙ্গে আমার কথাও বলেছেন, এটা বলতে পারতেন। কিন্তু নিজের কৃতিত্ব জাহির করতেই শুধু নিজের কথাই বলেছেন। এতে দলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়।’’

তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সুব্রত সাহার পৈতৃক ভিটে জলঙ্গিতে। ফলে তাঁর সঙ্গে জলঙ্গির সরাসরি যোগ রয়েছে। ২০০১ সালে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন সুব্রত। সে বছর তিনি আড়াই হাজার ভোটে সিপিএমের ইউনুস সরকারের কাছে হারেন। ২০০৬ সালেও তিনি প্রার্থী হন এবং সে বারও প্রায় ৬ হাজারের কাছাকাছি ভোটে হেরে যান। এর পরেই কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি এবং ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে সাগরদিঘি আসন থেকে জিতে মুর্শিদাবাদের এক মাত্র তৃণমূল বিধায়ক হন তিনি। জেলা তৃণমূলের এক নেতার দাবি, ‘‘দিদি বরাবরই সুব্রতবাবুকে পছন্দ করেন। তাই এর আগে দু’বার তাঁকে জেলা সভাপতিও করেছিলেন।’’

তা বলে তাহেরকে সরিয়ে রেখে সুব্রতকেই দায়িত্ব দেবেন মমতা?

তাহেরের দাবি, ‘‘দিদি আবেগপ্রবণ মানুষ। সামনের সারিতে সুব্রতদা ও আমি পাশাপাশি বসেছিলাম। তা দেখে তিনি দু’জনকেই ওই করিমপুরের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বলেছেন।’’ তাঁর আরও সংযোজন, ‘‘করিমপুর আমার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে। আগামী ১২ নভেম্বর সভা রয়েছে। ওই সভার পরে করিমপুরে যাব বলে আগেই ভেবেছিলাম। সুব্রতদা নিজের বিধানসভা এলাকায় নজর দিলে বরং ভাল হবে।’’ মহুয়া মৈত্রকে ফোন করা হলেও তিনি তা ধরেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement