দোকান খোলার প্রস্তুতি। সোমবার কৃষ্ণনগর স্টেশনে। নিজস্ব চিত্র।
বুধবার থেকে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় ব্যবসায়ী মহলে খুশির হাওয়া। কিন্তু ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখার উদ্বিগ্ন হকারেরা বলছেন, বুধবার তাঁরা ট্রেনে উঠবেনই। রেলের তরফে বাধা এলে ‘আন্দোলন’ হবে।
সোমবারও পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে জানানো হয়েছে, আপাতত হকারদের ট্রেনে উঠতে দেওয়া হবে না। স্টেশন চত্বরেও সম্ভবত বসতে দেওয়া হবে না কোনও বিক্রেতাকে। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে রবিবার বিকেলে জরুরি বৈঠকে বসে ব্যান্ডেল-কাটোয়া সর্বদলীয় রেল হকার্স সমন্বয় কমিটি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন সিটু, আইএনটিটিইউসি, এআইসিসিটিইউ এবং বিএমএস-এর প্রতিনিধিরা।
ওই সমন্বয় কমিটির সহ-সভাপতি সৌমেন অধিকারী এ দিন বলেন, “বৈঠকে ঠিক হয়েছে, বুধবার সব স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠবেন হকারেরা। প্ল্যাটফর্মে আগের মতোই বসবেন বিক্রেতারা। সকলেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন। ব্যান্ডেল-কাটোয়া শাখায় পাঁচ হাজারের বেশি হকার আছেন। ওঁরা কোথায় যাবেন?”
সিটু-র নবদ্বীপ শাখা সম্পাদক প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ জানান, আপাতত দু’টি ধাপে তাঁরা কাজ শুরু করবেন। লকডাউনের আগে ২৫টি দোকান ছিল নবদ্বীপ ধাম স্টেশনের তিনটি প্ল্যাটফর্ম মিলিয়ে। মঙ্গলবার সেগুলি নতুন করে বসানোর প্রক্রিয়া শুরু হবে। আর বুধবার থেকে অল্প সংখ্যক হকার ট্রেনে উঠে কাজ শুরু করবেন। মুখে থাকবে মাস্ক, হাতে বারবার স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করবেন। একটি কামরায় দু’তিন জনের বেশি হকার থাকবেন না বলে ঠিক হয়েছে।
প্রাণকৃষ্ণের হুঁশিয়ারি, “যদি বাধা আসে, হকারেরা আন্দোলনের পথে যেতে বাধ্য হবেন।” প্রায় একই সুরে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত সংগঠনের সম্পাদক অরুণ রায় বলেন, “আমাদের সামনে উপার্জনের আর কোনও বিকল্প নেই। রেল বাধা দিলে আমরা আন্দোলনে নামব।”
ব্যবসায়ীরা অবশ্য খোশমেজাজে। শিমুরালি বাজারের দোকানে বসে সোমবার তালিকা তৈরি করছিলেন এক ব্যবসায়ী। ট্রেন চললে রানাঘাট বাজার থেকে তালিকা মিলিয়ে জিনিস নিয়ে আসবেন। প্রায় আট মাস পরে। তবে সতর্কতার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে। চাকদহ সেন্ট্রাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল দেবনাথ বলেন, “ট্রেন চলাচল করলে উপকার অবশ্যই হবে। কিন্তু দুশ্চিন্তা একটা থেকেই যাচ্ছে। দোকানদারদের বলে দিয়েছি, মাস্ক পরে থাকবেন। সঙ্গে স্যানেটাইজ়ার রাখবেন।”