অভিযুক্ত ব্রজগোপালের বাড়ি
নদিয়ার হাঁসখালি গণধর্ষণ-কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ব্রজগোপাল গয়ালিকে জেরা করে রাজ্য পুলিশের তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন, তাঁর বাড়ির কোন ঘরে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সোমবার রাতে সেই ঘর থেকে একটি বিছানার চাদর সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। সেই চাদর থেকেই এ বার বীর্যের নমুনা মিলল বলে খবর পুলিশ সূত্রে। পাশাপাশি, রক্তমাখা কাপড়ের একটি টুকরোও পুলিশের হাতে এসেছে। গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর তদন্তে এই দুই নমুনা দিশা দেখাতে পারে।
হাঁসখালি গণধর্ষণ এবং মৃত্যুর মামলার তদন্তভার হাই কোর্টের পর্যবেক্ষণে সিবিআই করবে বলে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছে উচ্চ আদালত। যে ঘরে গণধর্ষণ হয়েছিল, সেখানকার বিছানার চাদর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে কি না, মামলার শুনানিতে এই প্রশ্ন তুলেছিলেন মামলাকারীদের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। তখন রাজ্যের কৌঁসুলিই জানিয়ে ছিলেন, সোমবার রাতে ওই বিছানার চাদর বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তবে বুধবার পর্যন্ত ওই চাদর ফরেন্সিক ল্যাবে পাঠানো সম্ভব হয়নি বলে রাজ্য পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। প্রাথমিক পরীক্ষার পরেই ওই চাদরে বীর্যের অস্তিত্বের কথা জানা গিয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের হাতে রক্তমাখা কাপড়ের একটি টুকরোও তুলে দিয়েছেন নির্যাতিতার এক আত্মীয়। পরিবারের দাবি, গত সোমবার জন্মদিনের পার্টি থেকে ফিরতেই ওই নাবালিকার অত্যধিক রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রক্তে ভেসে গিয়েছিল তার জামা। ওই সময়েই তাঁর জামার কিছু অংশ কেটে রাখা হয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ, এর পর ভোর রাতে নাবালিকার মৃত্যুর পর পাড়ার কিছু ছেলে এসে জবরদস্তি তার দেহ নিয়ে গিয়ে দাহ করে দেন। প্রশ্ন উঠছে, পুলিশ যখন হন্যে হয়ে প্রমাণ খুঁজছে, তখন এত দেরিতে ওই রক্তমাখা কাপড় কেন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হল? তবে, ওই কাপড়ে নির্যাতিতারই রক্ত রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হতে তার বাবা-মায়ের ডিএনএ পরীক্ষা জরুরি। যা এখনও করা সম্ভব হয়নি বলেই দাবি পুলিশ সূত্রে।
প্রসঙ্গত, হাঁসখালির ঘটনার তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে সিবিআই। বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ কলকাতা থেকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের একটি দল হাঁসখালির উদ্দেশে রওনা হয়েছে। সূত্রের খবর, বুধবার সন্ধ্যায় তাঁরা স্থানীয় থানায় গিয়ে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে নির্যাতিতার বাড়িতেও যেতে পারেন।