প্রতীকী ছবি।
জমি না মেলায় গ্রিন সিটি প্রকল্পের সাত কোটি টাকা ফেরত চলে গেল ধুলিয়ান পুরসভা থেকে। ১৪ কোটি টাকার ওই প্রকল্পে বাকি সাত কোটি টাকাও আর মিলবে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল!
যদিও ধুলিয়ানের পুরপ্রধান তৃণমূলের সুবল সাহার দাবি, “জমি নিয়ে আমলাদের শৈথিল্যের কারণেই এমনটা ঘটেছে। আমরা পুনরায় জমির সঙ্কট কাটিয়ে সে টাকা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
বাণিজ্য শহর ধুলিয়ানে সবুজের বালাই নেই। ২০০৯ সালে ঘটা করে শতবর্ষ উৎসব পালন করেছিল পুরসভা। শহরের জনসংখ্যা এক লক্ষ ছাড়িয়েছে। কিন্তু শিক্ষার হারে রাজ্যের মধ্যে তো বটেই, মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্যেও অনেক পিছিয়ে ধুলিয়ান। শতবর্ষ প্রাচীন শহরে এখনও পর্যন্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ ও ভবন গড়ে ওঠেনি কোনওটাই। শিশুদের জন্য পার্ক নেই। কমিউনিটি হল নেই।
শহরে চারটি উচ্চ মাধ্যমিক ও ৩৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। স্কুল শিক্ষিকা থেকে রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী থেকে পুরকর্তা সকলেই এক বাক্যে অভিযোগ তুলছেন শতবর্ষ প্রাচীন এই শহরের সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল গড়ে তোলার ব্যাপারে সরকারি উদাসীনতার।
পুরপ্রধান সুবল সাহা বলেন, “শহরে পূর্ত দফতরের সাত বিঘের একটি জমি রয়েছে। সেই জমিটাই পুরসভাকে ছেড়ে দেবে তারা। কথা হয়েছিল তেমনটাই। একটা ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র পেলে সেখানে গ্রিন সিটি করা যাবে। পার্ক, মঞ্চ, হল তৈরি হবে। এলাকাকে সবুজায়ন করা হবে। সব মিলিয়ে ১৪ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি হয়। রাজ্য সরকার তার অনুমোদনও দেয়। প্রথম দফার সাত কোটি টাকা এসেওছিল। কিন্তু পূর্ত দফতর শংসাপত্র না দেওয়াই সে টাকা ফেরত পাঠিয়ে দিতে হয়েছে রাজ্য সরকারকে।”
শমসেরগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক সিপিএমের তোয়াব আলি জানান, রাজ্যের এমন একটা শহর নেই যেখানে শিশুদের জন্য একাধিক পার্ক বা উদ্যান নেই। কিন্তু ধুলিয়ানে ১০ বছর বয়সি প্রায় ৩০ হাজার শিশুর শৈশবকে নিয়ে কেউ ভাবেননি, তাই শহরের কোথাও একটা পার্ক নেই যেখানে শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলে গিয়ে কিছুক্ষণ সময় কাটাতে পারে।
তিনি বলছেন, ‘‘বাম আমলে একবার পার্ক, মঞ্চ ইত্যাদি করার প্রস্তাব পাঠিয়েছিলাম রাজ্য সরকারের কাছে। গরুর হাটের সরকারি খাস জমিতে তা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তখনও আমলাদের গড়িমসি বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এ বারেও তাই ঘটল।”
জঙ্গিপুরের পূর্ত (সড়ক) দফতরের সহকারি বাস্তুকার নির্মলকুমার মণ্ডল জানান, জমিটি রাজ্য হাইওয়ে দফতর থেকে পূর্ত (সড়ক) দফতরকে হস্তান্তর করা হয়। পুরসভাকে জমিটি দেওয়ার বিষয়টি রাজ্যস্তরের বিবেচনার বিষয়। সিদ্ধান্ত নেবেন তারাই। ধুলিয়ানের ওই জমিটি অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। সেক্ষেত্রে পুরসভাকে জমিটি দিলে তাঁদের আপত্তির কিছু নেই। পূর্ত (সড়ক) দফতরের এক জেলা কর্তার কথায়, ‘‘যত দূর জানি, বিষয়টি আটকে রয়েছে বিভাগীয় যুগ্ম সচিবের দফতরে। সেখান থেকে ছাড়পত্র না মেলাতেই পুরসভাকে এই সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’’