শ্রীচৈতন্য মঠে রাজ্যপাল। মায়াপুরে। ছবি: প্রণব দেবনাথ
সন্দেশখালিতে বেলাগাম হিংসা চলছিল। তবে তিনি পশ্চিমবঙ্গে হিংসা বরদাস্ত করবেন না। হিংসা কঠোর হাতে দমন করা হবে। অশান্ত সন্দেশখালি এবং শাহজাহান শেখ গ্রেফতার প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকেলে মায়াপুরে এমনই মন্তব্য করেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
নবদ্বীপের মায়াপুরে শ্রীচৈতন্যমঠে শ্রীমদ্ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী গোস্বামী মহারাজের আবির্ভাবের সার্ধশতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত তিন দিনের ব্যাসপূজা মহামহোৎসবের উৎসবের আয়োজন করা হয়। বৃহস্পতিবার ছিল উৎসবের শেষ দিন। সেখানে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যপাল সন্দেশখালি প্রসঙ্গে বলেন, “অনিয়ন্ত্রিত হিংসা চলছিল সেখানে। আজ মূল অপরাধীকে আজ গ্রেফতার করা হয়েছে। আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। তা করা হয়েছে। আইন আইনের পথে চলবে। পশ্চিমবঙ্গে হিংসা বরদাস্ত করব না। মানুষের শান্তিতে বাঁচার অধিকার আছে। তাদের প্রয়োজনীয় শান্তি সুনিশ্চিত করতে হবে। হিংসা কঠোর হাতে দমন করা হবে।” তিনি আরও বলেন, “সন্দেশখালিতে স্বাভাবিকতা ফিরে আসছে। ভারতে মহিলাদের ক্ষমতা অসীম। তাঁরা জানেন কেমন করে নিজেদের তা রক্ষা করতে হয়। রাজ্য তাঁদের সঙ্গে আছে। রাজ্যপাল হিসাবে আমিও তাঁদের সঙ্গে আছি। দেখব যাতে তাঁরা ন্যায়বিচার পান এবং তাঁদের মর্যাদা ও সম্মান যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজ্যপাল হেলিকপ্টারে করে নামেন জাহাঙ্গিরপুরে। তার পর সড়ক পথে দুপুর ২টো নাগাদ তিনি মায়াপুর শ্রীচৈতন্য মঠে এসে পৌঁছন। তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। মধ্যাহ্নভোজের পর তিনি মূল অনুষ্ঠান মঞ্চে যান। সেখানে উপস্থিত ছিলেন কর্নাটক হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি তথা রবীন্দ্রভারতীর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শুভ্রকমল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি পার্থসখা দত্ত, শ্রীচৈতন্যমঠের আচার্য শ্রীভক্তিস্বরূপ সন্ন্যাসী মহারাজ প্রমুখ। রাজ্যপালকে শ্রীচৈতন্যমঠের পক্ষ থেকে সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয়। যাঁর ১৫০তম আবির্ভাব তিথি ঘিরে এই আয়োজন সেই শ্রীমদ্ভক্তি সিদ্ধান্ত সরস্বতী মহারাজ ছিলেন বিশ্বব্যাপী গৌড়ীয় মঠের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা আচার্য ভক্তিবেদান্ত স্বামীজির গুরু। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের তৃতীয় তথা শেষ দিনে বিভিন্ন গৌড়ীয় মঠের প্রধান এবং অনান্য ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় ছিল।
এ দিন রাজ্যপাল বক্তব্য শুরু করেন বাংলায়। বাংলা ভাষাকে তিনি নিজের ভাষা মনে করেন বলে জানান। রসিকতা করে তিনি নিজেকে ‘শিশু’ রাজ্যপাল বলেন। কেন না রাজ্যপাল হিসাবে তার মেয়াদ এক বছর পূর্ণ হয়েছে। তিনি বলেন, “শিশুরা সবসময় মায়ের কাছে সুরক্ষিত থাকে। আমিও বাংলায় তেমনই সুরক্ষিত আছি।”
বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ রাজ্যপাল মায়াপুর ছাড়েন।