ফাইল চিত্র।
সীমান্ত ঘেঁষা এ রাজ্যে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি কার্যকর হবে কি না তা নিয়ে সরগরম রাজনৈতিক মহল। এই আবহে কুপার্স ক্যাম্পে দলিল বিলির কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য। যা শুনে খুশি ক্যাম্পের বাসিন্দারা। অনেকেই রয়েছেন যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করলেও দলিল পাননি। ওই ঘোষণায় তাঁদের অনেকেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন।
কিন্তু যাঁরা কেন্দ্রের দেওয়া জমিতে বাস করেন তাঁরাও কি দলিল পাবেন তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। শাসকদলের নেতাদের আশ্বাস, কেন্দ্রের থেকে জমি কিনে তাঁদের দলিল দেওয়া হবে। কিন্তু তাতেও অনিশ্চয়তার মেঘ কাটছে না।
১২টি ওয়ার্ড নিয়ে ১৯৯৭ সালে কুপার্স নোটিফায়েড গঠিত হয়। বর্তমানে ওই এলাকায় প্রায় ৬ হাজার পরিবারের বাস। নোটিফায়েড সূত্রে খবর, এখনও কমবেশি দু’হাজার পরিবার দলিল পায়নি। ৮, ৯ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে এক হাজারের মতো পরিবার কেন্দ্র সরকারের জায়গায় বসবাস করছে। কিন্তু দলিল না থাকায় কারণে ওই সব পরিারের লোকজন বিভিন্ন সুযোগসুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নোটিফায়েডের চেয়ারম্যান শিবু বাইন বলেন, “রাজ্য সবাইকে দলিল দেওয়ার ব্যবস্থা করছে। এতে এলাকার মানুষের উপকার হবে। দলিল না থাকার জন্য অনেক কিছু করা যাচ্ছিল না।’’
কুপার্স নোটিফায়েডের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেবাশিষ মণ্ডল বলেন, “১৯৮৪ সাল থেকে আমাদের দলিল দেওয়া হবে বলে সরকার ঘোষণা করেছিল। এখনও আমরা দলিল পাইনি। এ বার শুনছি দলিল দেওয়া হবে।” ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বাচ্চু মালি বলেন, “দলিল না থাকায় বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। দলিল পেলে খুব ভাল হবে।’’
সন্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহার পরিষদের জেলা সম্পাদক অশোক চক্রবর্তী বলেন, “রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এনআরসি নিয়ে মানুষ যখন দুশ্চিন্তায় রয়েছে, সেই সময় এই সিদ্ধান্ত মানুষের মধ্যে আশা জাগিয়েছে। তবে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। এখানে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের জমি রয়েছে। রাজ্য সরকারের জমিতে যাঁরা বসবাস করছেন, তাঁদের সকলে এখনও দলিল পাননি। তা হলে, কেন্দ্র সরকারের জায়গায় বসবাসকারীদের কী হবে?”
কৃষ্ণ হাওলাদার, মথুর বারুইয়ের বাস কেন্দ্রের দেওয়া জায়গায়। তাঁরা বলেন, ‘‘দলিল না পাওয়ায় চিন্তায় আছি। রাজ্য বলছে দলিল দেবে। কিন্তু আমরা কী পাব?’’
কুপার্স শহর তৃণমূলের সভাপতি এবং ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার পিন্টু দত্ত বলেন, “রাজ্য সরকারের জায়গায় বসবাসকারী ৮৫ ভাগ মানুষ জমির কাগজ পেয়েছেন। বাকিরা এখনও পাননি। তাঁরা সেটা পেয়ে যাবেন। প্রয়োজনে রাজ্য কেন্দ্র সরকারের জমি কিনে নিয়ে সেখানে বসবাসকারীদের দলিল দেবে।”