নকশা: সাগরদিঘি স্টেডিয়ামের।
এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল স্টেডিয়াম নির্মাণের। ওই দাবি মেনে ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সাগরদিঘিতে নির্মিত হতে চলেছে স্টেডিয়াম। তার নকশা তৈরির কাজও শেষ হয়ে গিয়েছে। আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে ওই নির্মাণ কাজও শুরু হবে বলে জানা গিয়েছে।
তবে ইচ্ছে থাকলেই যে কিছু সম্ভব, তা দেখিয়ে দিলেন সাগরদিঘি ব্লকের বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু।
এলাকার বাসিন্দাদের দাবি মেনে আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে সাগরদিঘির বোখারার “লালমাটি স্টেডিয়াম”টিকে সরকারি স্টেডিয়াম হিসেবে গড়ে তোলার প্রকল্প তৈরি করে জেলাপ্রশাসনের কাছে জমা দেন। অনুমোদন করে স্টেডিয়াম তৈরিতে অর্থ বরাদ্দও করেছে জেলাপ্রশাসন।
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ও পানাগড়–মোরগ্রাম ৬০ নম্বর রাজ্য সড়ক গড়তে মাটি কেটেছিলেন শ্রমিকেরা। পরে ওই মাটি ডাঁই হয়ে স্টেডিয়ামের আদল নেয়। বোখারার গ্রামবাসীরা নিজেরাই স্টেডিয়ামের নামকরণও করে ফেলেন “লালমাটি স্টেডিয়াম।”
বোখারা এই সেই জায়গা।
প্রায় ১০০ বিঘে সরকারি জমি নিয়ে লালমাটি স্টেডিয়ামের এলাকা। পাশেই বীরভূম। মোরগ্রাম রেলস্টেশন। বাম আমলে প্রস্তাব ওঠে এখানে একটি স্টেডিয়াম গড়ার। কিন্তু সে প্রস্তাব রাজ্য সরকারের অনুমোদন পায়নি।
মাস দুই আগে আসা সাগরদিঘি ব্লকের বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু জানান, একদিন ক্রিকেট খেলা দেখতে গিয়ে ওই মাঠটি তাঁর নজরে পড়ে। জাতীয় সড়ক লাগোয়া মাঠটি সত্যিই দর্শনীয়। পরে খবরের কাগজেও দেখলাম স্থানীয় মানুষজনও চান স্টেডিয়াম গড়ে উঠুক। সেই মত বোখারা-১ পঞ্চায়েতকে দিয়ে একটি মিনি স্টেডিয়ামের নকশা তৈরি করিয়ে তড়িঘড়ি তা পাঠানো হয় জেলা প্রশাসনের কাছে। জেলা প্রশাসন অনুমোদন দেওয়াই তা গড়তে এখন সময়ের অপেক্ষা।
বিডিও বলছেন, “ওই মাঠে একটি ক্রিকেট প্রতিযোগিতা ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত চলবে। তার পরে শুরু হবে কাজ। চতুর্দশ ফিনান্স তহবিল থেকে ৫০ লক্ষ টাকা এবং কর্মসুনিশ্চিত প্রকল্প থেকে ৪০ লক্ষ মিলিয়ে মোট ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে তৈরি হবে ওই মিনি স্টেডিয়াম।’’ থাকবে একটি ড্রেসিং রুম, একটি মঞ্চ ও পার্কিং প্লেস। তবে স্টেডিয়ামের অন্য দিকে গ্যালারি তৈরি করা হলেও নিরাপত্তা ও জাতীয় সড়কের সুরক্ষার কারণে সেদিকে কোনও গ্যালারি গড়া হবে না বলেও বিডিও জানান।
বর্তমানে মোরগ্রাম স্পোর্টিং ক্লাবের বড় একটি ক্রিকেট খেলা চলছে ওই লালমাটি স্টেডিয়ামে। প্রতিযোগিতার প্রধান উদ্যোক্তা মোস্তাফিজুর রহমান মোল্লা বলেন, “এর চেয়ে ভাল খবর আর হয় না। বিডিও’র এই তৎপরতায় এলাকার ক্রীড়াপ্রেমী সমস্ত মানুষ অত্যন্ত খুশি।” সিপিএম নেতা রবীন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, “প্রশাসনের সদিচ্ছা থাকলে যে অর্থের অভাব হয় না, এটা তার নজির। বিডিওকে বলব মোরগ্রাম সেতুর নীচে পশ্চিমে প্রচুর সরকারি জমি পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। সে জমি কাজে লাগিয়ে কিছু একটা করা যায় কিনা ভেবে দেখতে।”
বোখারা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেস প্রধান শ্রাবণী দাস বলেন, “বহু চেষ্টাতেও বাম আমলে হয় নি। তাই বহুদিন পর তাই স্টেডিয়াম নির্মাণ এলাকার মানুষের স্বপ্নপূরণ বলা যায়। জাতীয় সড়ক ও রেল স্টেশন পাশে থাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও খুব ভাল। স্টেডিয়াম গড়ে উঠলে এলাকার গুরুত্ব অনেকটাই বেড়ে যাবে।”
—নিজস্ব চিত্র।