Goldsmiths

পড়তি দরেই সোনার আশা

পুজোর মুখে খুশির হাওয়া স্বর্ণশিল্পী মহলে।লকডাউনের জেরে অনেকগুলো বিয়ের মাস বৈশাখ থেকে শ্রাবণ কার্যত বসেই কাটিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পুজো কাটিয়ে অঘ্রানের মরশুম  সেই খামতি অনেকটা পুষিয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া পুজোর পরে ধনতেরাস।

Advertisement

দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০২০ ০৫:৩৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

যদিও এখনও অনেকটাই মাত্রাছাড়া, তবু দু’সপ্তাহে সোনার দর কমেছে প্রায় ছ’হাজার টাকা। পুজোর মুখে তাতেই খুশির হাওয়া স্বর্ণশিল্পী মহলে। অভিজ্ঞ ব্যবসায়ীরা অনুমান করছেন, গয়নার সোনার দাম আরও কিছুটা কমতে পারে। তাতে ঝিমিয়ে পড়া সোনার কারবার এই আশ্বিন থেকেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারে। পুজোর পরে অঘ্রানে বিয়ের মরশুম ঘিরেও তাই আশার আলো দেখছেন এত দিন মার খাওয়া স্বর্ণশিল্পীরা। মার্চে লকডাউন শুরুর সময় ৪০-৪১ হাজার টাকা ভরির গয়নার সোনার দাম আনলক পর্বে এক সময়ে পৌঁছে গিয়েছিল ৫৬৮০০ টাকায়। কিন্তু সেপ্টেম্বরের প্রথম থেকে ফের দর কমতে কমতে বুধবার ১০ গ্রাম গয়নার সোনার (হলমার্ক যুক্ত) দাম ছিল ৫৯২৬০ টাকা।

Advertisement

নবদ্বীপ স্বর্ণরৌপ্য ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক তরুণকুমার দে জানান, প্রধানত লকডাউনের কারণেই সোনার বাজারে এই ওঠাপড়া। সোনার দাম আন্তর্জাতিক বাজার, ডলারের দাম, তেলের দাম অনেক কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত। লকডাউনে বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় দেশে সোনার আমদানি থমকে গিয়েছিল। তাঁর কথায় “এখন যখন সব কিছু ক্রমশ স্বাভাবিক হচ্ছে, সোনার দাম পুরনো জায়গায় ফিরে আসার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সামনে পুজো, তারপর অঘ্রান মাস, বিয়ের মরশুম। ক্রেতারা আবার দোকানে আসছেন, খোঁজখবর নিচ্ছেন। অনেকে অপেক্ষা করছেন দামটা আরও কমবে বলে।”

যদিও অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘের রাজ্য সাংগঠনিক সম্পাদক তথা দক্ষিণ কৃষ্ণনগর স্বর্ণশিল্পী ওয়েলফেয়ার সমিতির সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য ততটা আশাবাদী নন। তিনি বলেন “মূলত যে শ্রেণির মানুষ সোনা কেনেন, তাদের হাতে এখনও অর্থ নেই। চাকরিজীবীদের হাতে অর্থ থাকলেও আমদের অভিজ্ঞতা হল, তারা সাধারণত যেটুকু না হলে নয় তার থেকে বেশি সোনা কেনেন না। এখনও ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা নেই। নিতান্ত বিয়ের অর্ডার ছাড়া সোনার দোকানে লোক আসছে না। যারা আসছেন, তাঁরা আবার বড় দোকান বা কোম্পানির শো-রুমে যাচ্ছেন। ফলে সাধারণ স্বর্ণ ব্যবসায়ীর জন্য এখনই ‘ভাল বাজার’ বলার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।”

Advertisement

নবদ্বীপের স্বর্ণ-রৌপ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোপালচাঁদ মল্লিক বলছেন, “গত বছর অঘ্রানে সোনার ভরি ছিল ৩৭ হাজারের আশপাশে। পৌষে গিয়ে দাঁড়াল চল্লিশের উপরে। ফাগুনে ৪১-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল। জুনে দোকান খুললেও সে সময়ে সোনার দোকানে মানুষ আসবেন ভাবাই অবাস্তব। জুলাই-এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে সোনার দাম।” অগস্টের মাঝামাঝি সোনার দাম ৫৬৮০০ টাকায় পৌঁছে যায়। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফের তা কমতে শুরু করেছে।

স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, হালকা ওজনের সোনার গয়না কেনাও শুরু হয়েছে। আসছে বিয়ের বায়না। লকডাউনের জেরে অনেকগুলো বিয়ের মাস বৈশাখ থেকে শ্রাবণ কার্যত বসেই কাটিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পুজো কাটিয়ে অঘ্রানের মরশুম সেই খামতি অনেকটা পুষিয়ে দিতে পারে। তা ছাড়া পুজোর পরে ধনতেরাস। ইতিমধ্যে বাজার আরও চাঙ্গা হবে, এমন আশাতেই এখন বুক বাঁধছে সোনার সংসার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement