শহরে চোর ও ছিনতাইবাজদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে বেশ কিছু দিন ধরেই। কিন্তু রবিবার সকালে যা ঘটল তাতে রীতিমতো অবাক বেলডাঙা। চলন্ত মোটরবাইক থেকে এক বৃদ্ধার হার ছিনতাই করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। পুলিশ ওই ঘটনায় এ দিন রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি।
ঠিক কী ঘটেছিল?
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন ভোরে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বেলডাঙার ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির দীপু বন্দ্যোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন আরও এক বৃদ্ধা। তাঁরা স্থানীয় সুগার মিলের উল্টো দিকে একটি কাঠের মিল লাগোয়া রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। দীপুদেবীর পায়ে সমস্যা থাকায় তিনি একটু পিছিয়ে পড়েছিলেন। তার পর রাস্তার পাশে একটি গাছ থেকে ফুল পাড়তে গিয়ে আরও দেরি হয়ে যায়। দীপুদেবী বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়েন।
সুনসান রাস্তায় তখন তিনি একাই হাঁটছিলেন। আচমকা বাইকের শব্দে তিনি পিছনে তাকান। তখনই চলন্ত বাইক থেকে তাঁর গলার হার ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় তিন জন দুষ্কৃতী। বৃদ্ধার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটেও আসেন। কিন্তু ততক্ষণে গলির রাস্তা ধরে উধাও হয়ে গিয়েছে সেই বাইক।
গত ত্রিশ বছর ধরে নিয়মিত ওই রাস্তায় প্রাতঃভ্রমণে বেরোন দীপুদেবী। তাঁর উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে। এ দিনের ঘটনার পরে তিনি রীতিমতো আতঙ্কিত। তিনি জানাচ্ছেন, সকালে হাঁটতে বেরিয়ে রাস্তার ধারের ফুলগাছ থেকে ফুল তুলে আনা তাঁর দীর্ঘ দিনের অভ্যাস। এ দিনও সেটা করতে গিয়ে তিনি সঙ্গীর থেকে পিছিয়ে পড়েন। ওই বৃদ্ধার কথায়, ‘‘কিছু বুঝে ওঠার আগে হারটি ছিনিয়ে তিরের বেগে বাইকটি মিলিয়ে যায়। তবে পিছনে বসে থাকা লোকটির গায়ে সবুজ গেঞ্জি ছিল।’’
পুলিশের অনুমান, দুষ্কৃতীরা এটা পরিকল্পনা করেই করেছে। তারা আগে থেকেই জানত ওই বৃদ্ধার গলায় সোনার হার রয়েছে এবং তিনি ওই পথেই হাঁটেন। জেলা পুলিশের এক কর্তার আশ্বাস, ‘‘খুব শিগ্গির ওই তিন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হবে।’’ তবে এমন ঘটনায় উদ্বিগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, গত মাস ছয়েক ধরে রেল স্টেশন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের সামনে ও শহরের বেশ কিছু জায়গায় এমন ঘটনা ঘটছে। মাস কয়েক আগেও একই কায়দায় সোনার হার ছিনতাই হয়েছিল। পুলিশের উচিত নজরদারি আরও বাড়ানো। পুলিশের দাবি, তারাও হাত গুটিয়ে বসে নেই। দিন আটেক আগে চুরি ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে মোট তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।