ফাইল চিত্র।-পিটিআই
নাগরিকত্ব আইন এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জির বিরুদ্ধে বিক্ষোভে জেলায় মুসলিমদের সঙ্গে সামিল হলেন হিন্দুরাও। তবে তেহট্ট, চাপড়ার মতো জেলার কয়েকটি জায়গায় বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ হলেও কোথাও সে ভাবে অশান্তি হয়নি।
রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বামেদেরই ফের নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় পথে নামতে দেখা যায়। শনিবার চাপড়ায় রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় সিপিআই (এমএল) লিবারেশন এবং ফরোয়ার্ড ব্লক। তারা এ দিন যৌথ ভাবে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। নাগরিকত্ব আইনের প্রতিলিপি জ্বালানোর পাশাপাশি টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখায় তারা। মুসলিমদের পাশাপাশি প্রতিবাদ জানাতে দেখা যায় হিন্দুদেরও। সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের নদিয়া জেলা সভাপতি সুবিমল সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘কোনও অবস্থাতেই আমরা নাগরিকপঞ্জি ও নাগরিকত্ব আইন মানব না। শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে আমরা রুখে দেব। আজকের এই বিক্ষোভ তারই সূচনা মাত্র।”
পাশাপাশি, এ দিন তেহট্টের নাজিরপুর এলাকায় করিমপুর-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। প্রায় সওয়া একঘণ্টা অবরোধ চলে। সেখানে নাগরিকত্ব আইন ও নাগরিকপঞ্জির বিরোধিতার পাশাপাশি হিন্দু মুসলিম সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা দেওয়া হয়। তেহট্টেরই মালিয়াপোতা এলাকাতেও রাস্তা অবরোধ করা হয়। জ্বালানো হয় টায়ার। এ দিন নাকাশিপাড়া ব্লকের গলায়দড়ি এলাকায় এই আইনের বিরোধিতায় মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ।
নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় শুরু হওয়া বিক্ষোভে মানুষের মধ্যে উদ্বেগ মাথাচাড়া দিলেও অহিংস পথেই প্রতিবাদ করার আহ্বান জানিয়েছেন বিক্ষোভকারীদেরই একাংশ।
অবশেষে নামছে তৃণমূল
নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিপুর
দেরিতে হলেও এ বার নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় পথে নামার প্রস্তুতি নিল তৃণমূল। এই আইনের প্রতিবাদে তারা আজ, রবিবার রানাঘাট ১ ব্লকে মিছিলের কর্মসূচি নিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। উল্টো দিকে, বিজেপিরও রাজ্যস্তরের নেতাদের আসার কথা রয়েছে।
আগেই রাস্তায় নেমেছে বামেরা। পথসভা ও মিছিল ছাড়াও তারা বাড়ি বাড়ি প্রচারের প্রস্তুতিও শুরু করেছে। আজ তাহেরপুর ও বাদকুল্লায় প্রতিবাদ মিছিলের ডাক দিয়েছে সিপিএম। পাল্টা নাগরিকত্ব আইন কতটা কার্যকর, তা বোঝাতে প্রচার শুরু করেছে বিজেপিও। অন্য দিকে, নাগরিকত্ব আইন নিয়ে সতর্ক হয়েই পা ফেলছে তৃণমূল। জেলায় দলের নেতারাও সে ভাবে মুখ খোলেননি।
তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবার রানাঘাট ১ ব্লকের খিসমা পঞ্চায়েত এলাকায় মিছিল হবে। রানাঘাট, কল্যাণী-সহ জেলার অন্যত্রও মিছিলের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মূলত উদ্বাস্তু অধ্যুষিত এলাকা বেছে নিয়ে প্রাথমিক ভাবে সেখানে প্রচারে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু পথে নামতে দেরি কেন? দলের এক নেতা বলেন, ‘‘নাগরিকপঞ্জি নিয়ে তো আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই নানা কর্মসূচি নিয়েছি।’’ রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শঙ্কর সিংহ বলেন, “দলের নেতৃত্বের নির্দেশ মতোই আমরা এই বিষয়ে কর্মসূচি নিচ্ছি।” কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলাতেও সোমবার থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক ব্লকে মিছিল এবং অন্য কর্মসূচি নেওয়া হবে। দলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার কো-অর্ডিনেটর নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আগে নামা বা দেরিতে নামার বিষয় নয়। আসল তো আন্দোলনকে সফল করে তোলা।”