ফলের খোঁজে। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র
পরীক্ষা শেষের ১৩৯ দিনের মাথায় করোনা আবহেই প্রকাশিত হল চলতি বছরে মাধ্যমিকের ফলাফল। আর তাতেই জেলার জয়জয়কার। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রকাশিত মেধাতালিকায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম দশে জেলার চার জন কৃতী পড়ুয়া স্থান পাওয়ায় খুশি জেলার শিক্ষকেরা। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের মেধা তালিকা অনুযায়ী পাঁচ জন পড়ুয়া পঞ্চম স্থান পেয়েছে। তাদের মধ্যে বহরমপুর গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইন্সটিটিউশনের ছাত্র বিভাবসু মণ্ডল এক জন। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৮। রাজ্যের তালিকায় সপ্তম স্থানে আছে সতেরো জন পড়ুয়া। তাদেরই এক জন কান্দি রাজ হাইস্কুলের ছাত্র দেবাক্ষ সিদ্ধান্ত। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। মাত্র এক নম্বর কম পেয়ে রাজ্যের নিরিখে অষ্টম স্থানে রয়েছে বহরমপুর জে এন অ্যাকাডেমির ছাত্র মহাঞ্জন দেবনাথ। মহাঞ্জন ছাড়াও ওই স্থানে রাজ্যের আরও দশ জন পড়ুয়া আছে। দশম স্থান দখল করেছে রাজ্যের ২৩ জন পড়ুয়া। তাদের মধ্যে একজন বেলডাঙা প্রণব বিদ্যাপীঠের ছাত্রী চয়নিকা মুর্মু। চয়নিকা মেয়েদের মধ্যে জেলায় প্রথম স্থান পেয়েছে।
তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর বাড়ল পাশের হারও। এ বার জেলায় মাধ্যমিকে পাশের হার ৮৪.৫৫ শতাংশ। ২০১৯ সালে ছিল ৮১.১৪ শতাংশ। বেড়েছে মেয়েদের পাশের হারও। গত বছর মেয়েদের পাশের হার ছিল ৭৫.৯৩ শতাংশ। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৭৯.১২ শতাংশ। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলায় মাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম ভর্তি করেছিল ৭২,৬৫৬ জন। কিন্তু তার মধ্যে নানা কারণে ৫৩৩ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে পারেননি। ২৯,২২৮ জন ছাত্র আর ৪২,৮৯৫ জন ছাত্রী শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা দিয়েছিল। তাদের মধ্যে পাশ করেছে ৬০,৯৮০ জন। সফল ছাত্রসংখ্যা ২৬,৪৭৮ জন (৯০.৫৯ শতাংশ) ছাত্রী সংখ্যা ৩৩, ৯৩৯জন (৭৯.১২ শতাংশ)।
এবছর কম্পার্টমেন্টাল পেয়েছে মোট পরীক্ষার্থীর ১.০৩ শতাংশ ছাত্র আর ১.৭৮ শতাংশ ছাত্রী। অকৃতকার্য হয়েছে ৭.৯৫ শতাংশ ছাত্র, ১৮.৭৭ শতাংশ ছাত্রী। মুর্শিদাবাদ জেলা মাধ্যমিক পরীক্ষা আহ্বায়ক শেখ মহম্মদ ফুরকান বলেন, “আমাদের জেলায় চার জন প্রথম দশে থাকায় খুব ভাল লাগছে। প্রত্যেক বিদ্যালয়ের পঠন পাঠনের মান যে বেড়েছে, তারই ফলাফল এটা। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও সহায়তা এক্ষেত্রে সাফল্যের অন্যতম কারণ।”
২০১৯ সালে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ৮২,২২৮ জন। এ বছর সেই সংখ্যাটা অনেকটাই কমেছে। তবে তার কারণ পড়ুয়াদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কমেছে এমন নয় জানিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অমরকুমার শীল বলেন, “আগে এক বাড়ি থেকে দু’জন কখনও তিন জন পরীক্ষা দিত। সেই কারণে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল।” ফুরকান বলেন, “আমাদের জেলায় যারা আর্থিক সম্পন্ন মানুষ তারা ছেলে মেয়েদের ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর ফলে পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে সরকারি বিদ্যালয়ে।”
এ বছর মোট পরীক্ষাকেন্দ্র ছিল ১৩৬টি। গত বছর ছিল ১৩৫টি। মধ্যশিক্ষা পর্ষদ থেকে প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে জেলার প্রথম ১৫ জনের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। সেই তালিকায় গোরাবাজার ঈশ্বরচন্দ্র ইন্সিটিটিউশনের আরও দু’জন ছাত্র, কান্দি রাজ হাইস্কুলের ও প্রণবানন্দ বিদ্যাপীঠের এক জন করে পড়ুয়া স্থান পেয়েছে। ওই তালিকা অনুসারে চয়নিকার থেকে মাত্র এক নম্বর কম ৬৮২ নম্বর পেয়ে জেলায় পঞ্চম স্থানে রয়েছে বহরমপুর জেএন অ্যাকাডেমির ছাত্র দ্বিজেন্দ্রমোহন ত্রিবেদী। তালিকায় সর্বনিম্ন ৬৭৫ নম্বর পেয়েছে জেলার তিন জন ছাত্র। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক কৃতীদের মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিয়েছেন।
উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |