প্রতীকী ছবি
পুরভোটের প্রার্থী হওয়ার জন্য প্রত্যেক ওয়ার্ড থেকে চার থেকে পাঁচ জন করে আবেদন করছে কংগ্রেস নেতৃত্বদের কাছে। সেই সময় প্রত্যেক ওয়ার্ডের তিন থেকে জনের নাম দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
পুরসভার নির্বাচনের দিন-ক্ষণ এখনও ঘোষণা হয়নি ঠিকই কিন্তু কান্দি পুরভোটকে সামনে রেখে কংগ্রেস ও তৃণমূলের অন্দরে প্রার্থী বাছাই থেকে প্রচার কমিটির গঠনের তোড়জোড় শুরু করেছেন দুই দলের নেতৃত্বরা।
তৃণমূল পুরভোটকে সামনে রেখে অনেক আগে থেকেই এগিয়ে আছে। দেওয়াল দখল থেকে দেওয়াল লিখন সব কিছুতেই ‘ফার্স্ট’ হয়েছে বলা যেতে পারে। সেখানে বিরোধীদের তেমন তোড়জোড় অবশ্য চোখে পড়ে না। অনেক আগেই জেলা তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী পুরসভায় পুরপ্রধান, শহর তৃণমূলের সভাপতি ও দু’জন দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে নির্বাচনী কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। ওই কমিটি ফের আরও একটি কমিটি গঠন করে পুরভোটের সমস্ত কাজ করছে। সেখানে বুথভিত্তিক কর্মী বৈঠক থেকে পাড়া বৈঠক শেষ করে এখন শুধু প্রার্থী ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন কর্মীরা।
প্রার্থী নির্ধারণ ও ঘোষণা করার ছাড় শহর তৃণমূল নেতৃত্বের উপর দেওয়া নেই। সেটা প্রদেশ তৃণমূল কমিটি ঠিক করবে কবে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হবে। এমনটা দাবি করে এক তৃণমূলের নেতা বলেন, “তৃণমূলের নির্বাচনি দায়িত্বে থাকা পিকে (প্রশান্ত কিশোর)র দলের লোকজন শহরে এসে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখছেন। তাঁরা কখন আসছেন কোন বাড়িতে গিয়ে কথা বলছেন, কোনও কিছুই জানা যাচ্ছে না। পিকে যাঁদের প্রার্থী করবেন, তাঁরাই প্রার্থী হতে পারবেন। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ দলের নেতাদের নেই।”
যদিও কান্দি পুরসভার কাউন্সিলর তথা কান্দি মহকুমা তৃণমূলের সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “দলের নেতৃত্বরা বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে কোন ওয়ার্ডে কাদের গ্রহণযোগ্যতা মানুষের কাছে বেশি। সেই মতো তিন জনের নাম জেলার সভাপতি ও পর্যবেক্ষকের কাছে পাঠানোর কাজ শুরু হয়েছে। উনারা যেটা করবেন সেটাই মেনে নিতে হবে।” এদিকে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে পুরভোটকে সামনে রেখে এখনও কোনও বৈঠকে বসতে পারেনি দুই দলের নেতৃত্বরা। শহরের রাজনৈতিক কারবারিদের মতে কান্দি পুরসভার ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে বামফ্রন্ট কতগুলি ওয়ার্ডে লড়াই করবে আর কংগ্রেস বামেদের কতগুলি ওয়ার্ডে লড়াই করার জন্য ছেড়ে দেবে সেটা এখন নিজেরা নিজেদের মধ্যেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। তাই আসন রফা নিয়ে বৈঠকে বিলম্ব। যদিও সিপিএমের কান্দি এড়িয়া কমিটির সম্পাদক স্বরূপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “কে কী বলছেন, তাতে আমাদের কিছু এসে যায় না। তবে মানুষের স্বার্থে আমরা আসন রফা করেই পুরভোটে লড়াই করব।” কংগ্রেস ইতিমধ্যেই পুরসভায় প্রার্থী হওয়ার জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে আবেদনপত্র নেওয়া শুরু করেছে কংগ্রেস।
কংগ্রেস সূত্রে জানা যায় পুরসভার প্রত্যেকটি ওয়ার্ড থেকে এরই মধ্যে গড়ে পাঁচ জন করে আবেদন করেছেন। যাঁরা আবেদন করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই নতুন মুখ। এবং সামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। ফলে কাকে ছেড়ে কাকে প্রার্থী করা যায়, সেটা নিয়েও কপালে ভাঁজ পড়েছে কংগ্রেস নেতৃত্বদের কপালে।
কান্দি বিধানসভার বিধায়ক তথা কান্দি মহকুমা কংগ্রেসের সভাপতি শফিউল আলম খান বলেন, “কংগ্রেসের টিকিট নেওয়ার জন্য নতুনরা যে ভাবে আবেদন করছেন তাতে আমরা প্রাথমিক ভাবে খুব খুশি। সব দিক খতিয়ে দেখেই প্রার্থী করা হবে। তার আগে বামেদের সঙ্গে আসন রফাটা চূড়ান্ত করাটাও একটা বড় কাজ।” সব মিলিয়ে পুরভোটকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলির অন্দরে যে ভোট উৎসব শুরু হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।