মিছিল। কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র
কেউ বলছেন ‘পুরনো শত্রুতা’, কারও মতে ‘কারবার’ নিয়ে গোলমাল। বগুলায় তৃণমূলের দুলাল বিশ্বাস খুনের পরে দু’দিন কাটলেও কে বা কারা কেন এই হামলা চালাল, তার কিনারা হল না।
ইতিমধ্যেই তদন্তভার সিআইডি-র হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার নদিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) দীনেশ কুমার বলেন, “সিআইডি এই মামলার তদন্ত করবে। তবে এখনও দায়িত্ব হস্তান্তর করা হয় নি।”
সোমবারই শঙ্কর বিশ্বাস ও কমল মজুমদার নামে দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন তাদের রানাঘাট আদালতে তোলা হলে দু’দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত বিমল বিশ্বাস-সহ বাকি ১১ জন অভিযুক্ত এখনও অধরা। খুনিদের ধরার দাবিতে এ দিন কৃষ্ণনগর-সহ বেশ কিছু জায়গায় মিছিল বের করে তৃণমূল। যে কার্যালয়ে ঢুকে খুনিরা দুলালকে গুলি করেছিল, দুপুরে দু’জন ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট এক্সপার্ট’ সেখানে সব খুঁটিয়ে দেখেন। একটি প্লাস্টিকে ও জলের বোতলে হাতের ছাপ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে তা কাদের, তা এখনও স্পষ্ট নয়। একটি মুখোশও মিলেছে।
তদন্তকারীদের মতে, আপাতত দু’টি ব্যাপারে তাঁরা প্রায় নিশ্চিত। ১) দুলাল-ঘনিষ্ঠ কেউ তাঁর গতিবিধি সম্পর্কে আততায়ীদের তথ্য দিয়েছে। ২) খুনিদের মধ্যে স্থানীয় লোকেদের পাশাপাশি পেশাদার বহিরাগতেরাও ছিল। সীমান্তে চোরাচালান কারবারে যুক্ত থাকা অপরাধীদেরও সন্দেহের বাইরে রাখা হচ্ছে না। বগুলা থেকে রামনগর সীমান্তের দূরত্ব খুব বেশি হলে ১২ কিলোমিটার। ফলে খুনিদের বাংলাদেশে চলে যাওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তবে পুলিশের সন্দেহের তালিকায় একেবারে প্রথম দিকে আছে অন্যতম অভিযুক্ত কার্তিক বিশ্বাস। এই কার্তিক ২০০৪ সালে দুলালের ভাই স্বপন বিশ্বাসের খুনে অন্যতম অভিযুক্ত ছিল। একই দিনে ভায়না বাজারে যে তিন জনকে পাল্টা খুনের অভিযোগ উঠেছিল দুলালের বিরুদ্ধে, তাঁদের এক জন কার্তিকের দাদা কৃষ্ণ বিশ্বাস। দুলাল সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে এসে হাঁসখালি ব্লক সভাপতি হওয়ার পরে কার্তিক এলাকায় থাকতে পারছিল না। দুলালের বড় ছেলে দীপঙ্করের দাবি, “আমাদের কাছে খবর আছে, যে তিন জন গুলি করতে ঢুকেছিল তাদের মধ্যে কার্তিক বিশ্বাস ছিল।”