নিজস্ব চিত্র
কথা ছিল, আধার কার্ডে তথ্য ভুল লেখা হয়েছে এমন দেড়শো জনের থেকে সোমবার কার্ড সংশোধনের আবেদন জমা নেওয়া হবে একটি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্কের তেহট্ট শাখায়। এর জন্য ১৫০টি কুপন বিলি করার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু এ দিন আশপাশের ৯-১০টি গ্রাম থেকে কার্ড নিয়ে হাজির হন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ! তাঁরা প্রত্যেকই নিজেদের আধার কার্ডে ভুল তথ্য শুধরে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন। ভিড়, ক্ষোভ-বিক্ষোভ, চিৎকার-চেঁচামেচিতে পরিস্থিতি ক্রমে নাগালের বাইরে যেতে থাকে। শেষ পর্যন্ত ভিড়ের বহরে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে ২ হাজার জনকে কুপন দেন এবং তাঁদের আধার কার্ডের বিভিন্ন ভুল শোধরানোর অভিযোগ জমা নেন। বাকিদের ফিরে যেতে হয়।
ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, মূলত জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে আতঙ্কিত হয়েই এ দিন প্রত্যাশার তুলনায় দ্বিগুণ লোক হাজির হয়েছিলেন। তাঁদের বেশিরভাগই মনে করছেন, আধার কার্ডের তথ্যে ত্রুটি থেকে গেলে দেশের নাগরিক তালিকা থেকে নাম বাদ পড়তে পারে। তাই ব্যাঙ্কে আধার কার্ডের ভুল তথ্য ঠিক করে দেওয়া হবে বলে জানতে পেরে ভিড় ভেঙে পড়ে। এঁদের বেশির ভাগই এসেছিলেন তেহট্টের আশপাশের মালিয়াপোতা, তরণীপুর, চাঁদের ঘাট, ফতাইপুর, নবীননগর, সাহাপুর, নওদাপাড়ার মতো বিভিন্ন গ্রাম থেকে। এই গ্রামগুলির অনেকগুলি আবার একেবারে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা।
বাংলাদেশ-ঘেঁষা নবীনগরের বাসিন্দা জান্নান ফকির যেমন বলেন, ‘‘এখন জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কত রকম কথা হচ্ছে। আধার কার্ডে নামের বানান বা ঠিকানা ভুল থাকলে হয়তো আমাদের ভবিষ্যতে সমস্যা হতে পারে এই ভেবেই কার্ড সংশোধন করে নিতে আমরা রবিবার রাতেই ব্যাঙ্কের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছে।’’
চাঁদের ঘাট থেকে এসেছিলেন সোহাগী মন্ডল। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের পাড়ায় সকলে নাগরিকপঞ্জি নিয়ে চিন্তিত। ওঁদের মুখে শুনেছি, কার্ডে সমস্ত সরকারি তথ্য সঠিক হওয়া দরকার। কিন্তু আমার আধার কার্ডের তথ্যে সরকারি কর্মীদের গোলমালেই নানা সমস্যা থেকে গিয়েছে। নাগরিকপঞ্জী নিয়ে ভয়ে ছুটে এসেছি তেহট্টে।’’ তেহট্টের বিডিও শেখরকুমার চৌধুরী বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের নাগরিকপঞ্জি নিয়ে চিন্তা করার কিছু নেই, রাজ্য সরকার তো বলেই দিয়েছে যে, এই রাজ্যে ও সব হবে না।’’