ফাইল চিত্র।
জমিতে উৎপাদিত ফসল চাষিদের থেকে সাধারণ ক্রেতার কাছে পৌঁছনোর মাঝে পাইকারি ব্যবসায়ী, আড়তদার, ফড়ে এবং খুচরো ব্যবসায়ীদের হাতবদল হয়। আর সকলের লভ্যাংশের প্রভাব গিয়ে পড়ে আনাজের দামের উপরে। ক্রেতা সেই দাম দেন। কিন্তু তাঁরা যে দামে জিনিস কেনেন তার থেকে অনেক কম টাকা আসে চাষির ঘরে।
তার উপরে এ বছর আমপান ও একাধিক নিম্নচাপের ও বর্ষার অতিরিক্ত বৃষ্টিতে অনেক আনাজ চাষ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যে সামান্য জমিতে আনাজের গাছ রয়েছে তার উৎপাদন চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দাম বাড়ছে। করিমপুরের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, এলাকার বিভিন্ন জায়গায় সপ্তাহের দু’দিন বা প্রতিদিন কাঁচামালের হাট বসে। সেখানে আশেপাশের এলাকার কয়েক হাজার চাষি উৎপাদিত আনাজ পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। সেই মাল ট্রাক বোঝাই হয়ে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জায়গার আড়তদারের কাছে যায়। তাঁরা ফড়েদের কাছে সেই মাল বিক্রি করেন। ফড়েদের থেকে তা খুচরো ব্যবসায়ী ও তার পর ক্রেতাদের
কাছে পৌঁছয়।
ধরা যাক, পটল চাষির থেকে ত্রিশ টাকা কেজি পাইকারি দরে কিনছেন ব্যবসায়ী। যদি খবর থাকে যে, আড়়তদারের কাছে পটলের খদ্দের আছে কিন্তু মজুত কম তখন চাহিদার কথা ভেবে কিছু বেশি দামে কেনা শুরু হয়।
আবার সঠিক সময়ে মাল পৌঁছতে বা ট্রাক ভর্তি না হলে অনেক সময় চড়া দামে মাল কেনা হয়। অর্থাৎ ত্রিশ টাকার পটল চৌত্রিশ টাকা হয়ে যায়। সেই পটল আড়তে কখনও আটত্রিশ-চল্লিশ টাকায় আবার কখনও ত্রিশ-বত্রিশ টাকায় বিক্রি হয়। ওই পটল ফড়ে ও খুচরো ব্যবসায়ীর মাধ্যমে ক্রেতার কাছে বিক্রি হয় পঞ্চাশ-ষাট টাকায়। চাষির আনাজ চার-পাঁচ হাত ঘুরে ক্রেতার কাছে যেতে দামের বিস্তর ফারাক তৈরি হয়।
চাষিদের অনেকের অভিযোগ, আনাজ নিয়ে বাজারে প্রবেশ করলেই কিছু পাইকার তাঁদের ধরেন। ভুল বুঝিয়ে কম দামে আনাজ কিনে নেন। আবার এক শ্রেণীর আড়তদারের খপ্পরে পরেও কম দামে আনাজ বিক্রি করতে হয়। আড়তে এক বার আনাজ নিয়ে গেলে আর রক্ষা নেই। তাঁদের দামে বিক্রি করতেই হয়। সেখানে চাষিরা দরদাম করে আনাজ বিক্রি করতে পারেন না।
দামের ব্যাপারে আড়তদারের উপর তাঁদের নির্ভর করতে হয়। চাকদহ থানার সরাটির বাসিন্দা নুর ইসলাম মণ্ডল বলেন, “আড়তে আনাজ বিক্রি করলে চাষিদের লাভ কম হয়। আড়তদারদের টাকা দিতে হয়। বেশির ভাগ সময়ে আড়তদারই আনাজের দাম ঠিক করে দেয়।