বাড়ির উঠোনেই পড়াশোনা মাসুমের। —নিজস্ব চিত্র।
ভাঙা ঘরে চাঁদের আলোর কমতি ছিল না এমনিতে। তবুও চাঁদপানা ছেলের শখ ছিল। গরিব চাষির সেই ‘স্পর্ধা’তেই আজ উজ্জ্বল গোটা গ্রাম। দু’মুঠো ভাতের জন্য ছোট্ট বয়স থেকে মাঠে খাটতে হত যাকে, কান্দির সেই ‘মাসুম’ ছেলেটিই এখন জীবন বাঁচানোর কারিগর হয়ে উঠছেন।
কান্দি ব্লকের কুমারষণ্ড গ্রাম পঞ্চায়েতের শোলপাড়ার চাষি মিনারুল হক। চাষবাস করে কোনও রকমে সংসার চালান। তার মধ্যেও কষ্ট করে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন ছেলেকে। তবে বাকি ঘষামাজাটুকু নিজেকেই করতে নিতে হয়েছে মাসুম হাসানকে।
ছোট্ট থেকেই বাবার সঙ্গে মাঠের কাজে হাত লাগাতে হয়েছে মাসুমকে। তবে হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পরেও পড়াশোনা থামাননি তিনি। তার ফলও মেলে হাতেনাতে। উচ্চমাধ্যমিকে ৯৬ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাশ করেন তিনি। তার পর মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে এমবিবিএস পড়ার সুযোগ পেয়ে যান। তাঁর এই কৃতিত্বইেই এখন স্বপ্ন দেখার সাহস জোগাচ্ছে গোটা গ্রামের মানুষকে।
তবে ডাক্তারি পড়লেও, এখনও নিয়ম করে কাস্তে হাতে মাঠে ধান কাটতে যান মাসুম। গরুকে খাবার দেওয়ার দায়িত্বও তাঁর। অনটনের সংসারে পিসি কিছু দিন আগেই ক্যানসারে মারা গিয়েছেন। ৮০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী বোনও। চিকিৎসক হয়ে তাই সংসারের হাল ধরাই এখন প্রধান লক্ষ্য মাসুমের।