শীতের আনাজ। নিজস্ব চিত্র।
গত দশ দিনে এক ধাক্কায় অর্ধেক বা তারও বেশি কমে গিয়েছে শীতের আনাজের দাম। এক সঙ্গে বেশি আনাজ উৎপাদনের ফলে দাম কমে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধা পেয়েছেন, তেমনই হতাশ চাষিরা।
করিমপুরের আনাজ চাষি রমেশ সরকার জানান, আশপাশের এলাকায় বহু চাষি বর্তমানে আনাজ চাষ করেন। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে জল জমে থাকায় শীতের আনাজ চাষ গোড়ায় মার খেয়েছে। মরশুমের শুরুর দিকে কিছু উঁচু জমিতে কপি বা শাক চাষ হলেও বেশির ভাগ জমি চাষযোগ্য ছিল না। ফলে শীতকাল চলে এলেও আনাজের উৎপাদন বা বাজারে আমদানি ছিল না। তখন অনকটাই চড়া দামে আনাজ বিক্রি হয়েছে। তবে চাষিদের উৎপাদন বেশি না হওয়ায় লাভ তত হয়নি। আর এক চাষি অমর মণ্ডলও জানাচ্ছেন, আবহাওয়ার কারণে এ বছর প্রায় এক মাস দেরিতে চাষ হয়েছে। জমিতে আনাজ উৎপন্ন না হওয়ায় আলু থেকে যে কোনও আনাজ অন্যদের মত চাষিদেরও বেশি দামে কিনে খেতে হয়েছে। এখন এক সঙ্গে বেশি পরিমাণে বিভিন্ন আনাজ উঠতে শুরিু করায় দাম কমে গিয়েছে। খুচরো আনাজ ব্যবসায়ী অজয় মণ্ডলের কথায়, “এলাকায় উৎপন্ন সব আনাজের দাম অর্ধেক বা তারও বেশি কমে গিয়েছে। গত আট-দশ দিনে ধীরে ধীরে আনাজের দাম কমছে। ৩০ টাকা কেজি শিম যেমন এখন ১০-১২ টাকায় নেমেছে, তেমনই ২০ টাকার ফুলকপির দাম এখন ৫ টাকা।
একই ছবি জেলার দক্ষিণেও। বৃহস্পতিবার সকালে চাকদহের শিমুরালি বাজারে মাত্র ১০ টাকা দিয়ে বেশ বড় সাইজের ফুলকপি কেনেন তেলিপুকুরের বাসিন্দা বিমল পাল। তিনি বলেন, “কয়েক দিন আগেও এই সাইজের কপির দাম ছিল কমপক্ষে ২০ টাকা। এখন বাজার করে বেশ আরাম হচ্ছে। অল্প টাকার আনাজেই ব্যাগ ভর্তি হয়ে যাচ্ছে।” স্থানীয় আনাজ বিক্রেতা আজমল মণ্ডল জানান, অনেক সময়ে ক্রেতারা খুচরো ব্যবসায়ীদের ভুল বোঝেন। শীত পড়ে গেলেও আনাজের দাম বেশি থাকায় অনেকেই সমস্যায় পড়ছিলেন। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যে দামে কিনবেন, তার উপর সামান্য লাভ রেখেই তো বিক্রি করতে হয়। এখন দাম কমেছে। তাই কম দামে বিক্রি করা যাচ্ছে। গত কয়েক দিন ধরেই রানাঘাট, মদনপুর, শিমুরালি, চাকদহ সহ বিভিন্ন জায়গায় বাজারে শীতের আনাজের দাম কমে গিয়েছে। মদনপুরের বাসিন্দা কৃষক নারায়ণ ঘোষ বলেন, “এখন ভাল সাইজের কপি ৬-৭ টাকা প্রতি পিস দরে পাইকারি বিক্রি করেছি। মাঝে আরও দাম কমে গিয়েছিল। সেই সময়ে ৪ টাকা পিস দরে বিক্রি করেছিলাম। পুজোর সময়ে প্রতি পিস কপি কমপক্ষে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম এবং বেশ লাভ ছিল।”