—প্রতীকী চিত্র।
ব্যস্ততম বাজারেই ঘণ্টাখানেকের ব্যবধানে লেনদেন হয়ে যায় প্রায় কোটি টাকা। নিলামে পাইকারি কেনাকাটায় নগদ লেনদেনে নোট যাচাইয়ের সে ভাবে অবকাশ থাকে না। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্বল্প সময়ে জালনোট ছড়িয়ে দিচ্ছেন পাচারকারীরা। অভিযান চালিয়ে দুই জালনোট কারবারিকে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করতে এমনই চক্রের হদিশ পেল পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে বাংলাদেশের চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে মালদহের বৈষ্ণবনগর হয়ে মুর্শিদাবাদে পৌঁছে যায় মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন মার্কেটে। এই জালনোট চক্র নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্বাচন শেষে বাড়তি নিরাপত্তা প্রত্যাহার হতেই ‘মরিয়া’ হয়ে উঠেছে জালনোট পাচারকারীদের চক্র। ওই কাজে সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে কিছু দিন আগে মালদহে গ্রেফতার হয়েছেন মানিক শেখ এবং ইনজামামুল শেখ নামে দুই ব্যক্তি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে রাজ্য স্পেশাল টাস্ক ফোর্স জানতে খবর পেয়েছে যে, বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে নোট পৌঁছে যাচ্ছে মালদাহারে বৈষ্ণব নগরে। এক লক্ষ টাকার মধ্যে চল্লিশ হাজার টাকায় কেনা জাল নোট হাতবদল হয়ে খুচরো কারবারিদের কাছে লাখ প্রতি ষাট হাজারে বিক্রি হয়। মূলত পাকিস্তানের তৈরি হওয়া ভারতীয় জালনোটগুলি গুণগত মানের দিক থেকে ‘ভাল’। ফলে লক্ষ লক্ষ টাকার আসল নোটের মধ্যে হাজারে হাজারে সহজেই মেশানো যাচ্ছে জালনোট। নিলামের বাজারে ব্যস্ততার সুযোগ নিয়ে বিকিকিনিতে অংশ নিচ্ছে পাচারকারীরা।
পুলিশের একটি সূত্রে খবর, ইদের বাজারে বিক্রিবাটা বেশি বলে এখন বেশ কিছু বাজারকে টার্গেট করেছে পাচারকারীরা। মোটা বান্ডিলের নোটের মধ্যে মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিপুল পরিমাণ জাল নোট। সাধারণ পশু ব্যবসায়ীদের কাছে জালনোটগুলি চিহ্নিত করা দুরূহ কাজ। ওই সুযোগই কাজে লাগাচ্ছে ওই কারবারিরা। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরনো জালনোট পাচার চক্রের একাধিক পান্ডা এখন জেলবন্দি। নতুন করে তৈরি হওয়া চক্র মুর্শিদাবাদে সক্রিয় হচ্ছে। ওই চক্রকে বাগে আনাই জেলা পুলিশের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ। এ নিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘জেলার জালনোট পাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে। জালনোট পচার রুখতে জেলা গোয়েন্দা বিভাগকে আরও সক্রিয় করা হচ্ছে।’’