জাল নোটের রমরমা ঠেকানো ছিল নোট বাতিলের অন্যতম প্রধান কারণ
নোটবন্দির পর জাল নোটের রমরমা কমবে এমনটাই আশ্বাস ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের। টাকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে তাতে বিশ্বাস রেখেছিল মানুষ। কিন্তু সব বিশ্বাসে ছাই ঢেলে নোটবন্দির তিন বছর পূর্তির হিসেব দেখিয়ে দিচ্ছে, জাল নোটের কারবারের বাড়বাড়ন্তে ভাঁটা পড়েনি বিন্দুমাত্র। বরং বেড়েছে।
জাল নোটের রমরমা ঠেকানো ছিল নোট বাতিলের অন্যতম প্রধান কারণ। প্রশাসন থেকে পুলিশ, বিএসএফ এমনকি সাধারণ মানুষও নিশ্চিন্ত ছিলেন আপাতত জাল নোট থেকে স্বস্তি মিলবে তাঁদের।
কিন্তু নোট বাতিলের ঠিক দু মাসের মাথায়, ২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি যখন মালদহের সীমান্ত বৈষ্ণবনগরে একটি নতুন ২০০০ টাকার জাল নোট-সহ ধরা পড়ল পিয়ারুল সেখ নামে বছর পনেরোর এক কিশোর, সারা দেশ চমকে উঠেছিল। এত দ্রুত সময়ের মধ্যে নয়া দু’হাজারি নোট কি জাল হওয়া সম্ভব?
তা যে সম্ভব, তার প্রমাণ মিলেছিল তার দু সপ্তাহের মধ্যেই , ৮ ফেব্রুয়ারি। যখন মুর্শিদাবাদের ইসলামপুর থানায় পুলিশের হাতে ৪০টি কড়কড়ে দু’হাজার টাকার নোট-সহ ধরা পড়ল বছর বিয়াল্লিশের আজিজুর রহমান, যার বাড়ি মালদহের সীমান্ত এলাকা বৈষ্ণবনগরের চরে।
রাজ্যে জাল নোটের কারবারে বরাবরই শীর্ষে মালদহ। করিডোর হিসেবে এরপরেই ছিল মুর্শিদাবাদ জেলার নাম, যার শীর্ষে ছিল শমশেরগঞ্জ ও ফরাক্কা।
নোট বন্দির পর পুলিশের হিসেব বলছে, মালদহকে যেন পিছনে ফেলেছে মুর্শিদাবাদ। নোট বাতিলের তৃতীয় বর্ষ পূরণের ঠিক আগের দিন, বুধবার সন্ধ্যেয় শমসেরগঞ্জের পিলকির মোড়ে ২ লক্ষ টাকার জাল নোট-সহ ২ জনকে গ্রেফতার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে জাল নোটের কারবারে মুর্শিদাবাদ ও মালদহের সেই অবস্থানের বিন্দুমাত্র হেরফের ঘটেনি।
গোয়েন্দা দফতর সূত্রেই এ খবর জানা গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া এই সব জাল নোটের সমস্ত জোগানটাই আসছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে। জেলা পুলিশের এক বড় কর্তা বলছেন, “নোটবন্দির পর আশা ছিল অন্ততঃ জাল নোটের হাত থেকে বছর খানেকের জন্য নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। কিন্তু তা আর হল কই? নোট বন্দির নয়া নোটের জাল কারবারের রমরমা রইল যে কে সেই!”