Murder

জোড়া খুনে ধৃত পুরনো এক সহকর্মী

অক্ষয়ের ভূমিকা নিয়ে আগাগোড়া সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন নিহতদের পরিবারের লোকেরা। তবে খুনের কারণ এবং গতিপ্রকৃতি নিয়ে ধন্দে ছিলেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২১ ০৪:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

শান্তিপুরে জোড়া খুনের ঘটনায় অক্ষয় বর্মণ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃতের বাড়ি শান্তিপুরের বাবলাবন এলাকায়। শনিবার হুগলি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিনই রানাঘাট আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার আদেশ দেন।

Advertisement

রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, “এক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।” তবে এক সঙ্গে দু’জনকে খুন করার জন্য একাধিক লোক দরকার বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। অক্ষয়ের সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তৃণমূলের লোকেরা তাদের কর্মীদের খুন করেছে দাবি করে শুক্রবার ১২ ঘণ্টা শান্তিপুর বন্‌ধ ডেকেছিল বিজেপি। তবে শনিবার রাত পর্যন্ত রাজনীতির কোনও প্রত্যক্ষ সংযোগ খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে শান্তিপুরের হরিপুরের বর্মণপাড়ার বাসিন্দা প্রতাপ বর্মণ এবং হাউসসাইট কলোনির বাসিন্দা দীপঙ্কর বিশ্বাসের রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয় বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি কলাবাগানে। ধৃত অক্ষয়ের বাড়িও তাঁদের বাড়ির কাছেই হরিপুর পঞ্চায়েতের বাবলাবন এলাকায়। তাঁরা পূর্ব পরিচিত। নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, এক সময়ে একই চালকলে কাজ করায় প্রতাপ ও দীপঙ্করের বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। সেই চালকলেই এক সময়ে কাজ করত অক্ষয়ও। তবে পরে কোনও কারনে তার কাজ চলে যায়।

Advertisement

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বুধবার বিকেল ৫টা নাগাদ প্রতাপ বাড়ি থেকে বেরিয়ে দীপঙ্করের বাড়িতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় তাঁদের এক বন্ধু ফোন করে তাঁকে শান্তিপুর স্টেশন থেকে নিয়ে আসতে বলেন। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ দীপঙ্করের মোটরবাইকে চেপে দু’জনে বেরিয়ে যান। ফোন করা ওই ‘বন্ধু’ই অক্ষয় বলে দাবি পরিবারের।

দীপঙ্করের স্ত্রী রীতা বলেন, “অক্ষয় ফোন করে তাকে স্টেশন থেকে নিয়ে আসতে বলেছিল। অক্ষয় নেশা করে বলে আমি ওর সঙ্গে আমার স্বামীকে মিশতে বাধা দিতাম। তাই ওই দিন বারবার জিজ্ঞাসা করার সত্ত্বেও ও অক্ষয়ের ফোনের কথা বলেনি। বেরোনোর সময়ে প্রতাপ জানায়, তারা অক্ষয়কে আনতে যাচ্ছে।” প্রতাপের মা ঝুনু বর্মণ বলেন, “এই ছেলেটির সঙ্গে দীপঙ্কর এবং আমার ছেলে দু’জনেরই আলাপ ছিল এক জায়গায় কাজ করার সুবাদে। তবে পরে ছেলেটির কাজ চলে যায়। তা নিয়ে ওর কোনও রাগ থাকতে পারে।”

পরিবার সূত্রের খবর, অক্ষয়কে আনতে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়ে হলেও প্রতাপ এবং দীপঙ্কর আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন সকালে তাঁদের দেহ মেলে। তবে অক্ষয়ের পরিবারের দাবি, সে কলকাতায় একটি কারখানায় কাজ করে। সোমবার সে কর্মস্থলে চলে গিয়েছিল। এর পরে আর ফিরে আসেনি। তার ফোন খারাপ থাকায় তার সঙ্গে পরিবারের কারও যোগাযোগও হয়নি।

অক্ষয়ের ভূমিকা নিয়ে আগাগোড়া সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন নিহতদের পরিবারের লোকেরা। তবে খুনের কারণ এবং গতিপ্রকৃতি নিয়ে ধন্দে ছিলেন তদন্তকারীরা। নির্জন ওই কলাবাগানে দুই বন্ধু কেন গেলেন সেই প্রশ্নেরও সদুত্তর মেলেনি। ঘটনাস্থলের সামনে একটি নির্মীয়মাণ বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজও খতিয়ে দেখে পুলিশ। তবে রাতের ছবিতে সেই সময়ে বিশেষ কিছু মেলেনি। শুক্রবার রাতেও ঘটনাস্থলে যান পুলিশ সুপার, এসডিপিও-সহ পদস্থ পুলিশকর্তারা। তবে তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে মুখ খুলতে চাননি পুলিশকর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement