চুক্তিতে শিক্ষক মেলে না, বন্ধ ইংরেজি মাধ্যম

বিল্বগ্রামের কনিষ্ক চট্টোপাধ্যায় তাঁর ছেলে দেবার্ককে গত বছর ইংরেজি মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ছেলেকে বাংলা মাধ্যমে ফেরানোর আবেদন করেন। তাঁর কথায়, “আমাদের এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম হাইস্কুল নেই। জেসিএম স্কুলে তা চালু করায় অনেক আশা নিয়ে ছেলেকে সেখানে ভর্তি করেছিলাম।

Advertisement

সামসুদ্দিন বিশ্বাস

বেথুয়াডহরি শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৭ ০১:৫৮
Share:

বছর দেড়েক আগেও ইংরেজি মাধ্যম মাধ্যমিক স্কুল ছিল না বেথুয়াডহরিতে। অনেকের ইচ্ছের কথা জেনে গত বছর জানুয়ারিতে বাংলার পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম শাখা খুলেছিল বেথুয়াডহরি জেসিএম হাইস্কুল। কিন্তু শিক্ষকের অভাবে তা বন্ধ করে দিতে হল।

Advertisement

গত বছর থেকে ওই স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস শুরু হয়েছিল। ভর্তি হয়েছিল ৩৪ জন। তাদের মধ্যে ২৪ জন ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠেছিল। এ বছর পাঁচ মাস ষষ্ঠ শ্রেণির ক্লাসও হয়েছে। মাঝপথেই তা বন্ধ হল। যে ২৪ জন পড়ুয়া ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশুনা করছিল, তাদের বাংলা মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ইংরেজি মাধ্যমের হাল খারাপ দেখে এ বছরে পঞ্চম শ্রেণিতে আর কোনও ছাত্র ইংরেজি মাধ্যমে ভর্তি হয়নি।

বিল্বগ্রামের কনিষ্ক চট্টোপাধ্যায় তাঁর ছেলে দেবার্ককে গত বছর ইংরেজি মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলেন। সম্প্রতি তিনি ছেলেকে বাংলা মাধ্যমে ফেরানোর আবেদন করেন। তাঁর কথায়, “আমাদের এলাকায় ইংরেজি মাধ্যম হাইস্কুল নেই। জেসিএম স্কুলে তা চালু করায় অনেক আশা নিয়ে ছেলেকে সেখানে ভর্তি করেছিলাম। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে দেখলাম, শিক্ষকের অভাবের জেরে ক্লাস ঠিক মতো হচ্ছে না। তাই ছেলেকে বাংলা মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হয়েছে।”

Advertisement

নাকাশিপাড়ার গলায়দড়ি পাড়ার আনোয়ার হোসেনও তাঁর ছেলে মহম্মদ নুর আলমকে ইংরেজি মাধ্যমে পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি করেছিলেন। তাকেও বাংলা মাধ্যমে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। আনোয়ার বলেন, “শিক্ষকের অভাবে নিয়মিত ক্লাস হতো না। ফলে পড়াশুনার খুব ক্ষতি হচ্ছিল। তাই অন্যদের মতো আমার ছেলেকেও ইংরেজি মাধ্যম থেকে বাংলা মাধ্যমে সরিয়ে এনেছি।”

স্কুল সূত্রে জানা যায়, গত বছর পঞ্চম শ্রেণিতে স্কুলের দু’জন শিক্ষক এবং চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত তিন জন শিক্ষক ইংরেজি মাধ্যম চালাচ্ছিলেন। এরই মধ্যে চুক্তির ভিত্তিতে নিযুক্ত এক জন চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেলে সমস্যা দেখা দেয়। তা আর মেটেনি, বরং বেড়ে চলে। বিরক্ত হয়ে অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়ের বাংলা মাধ্যমে ফিরিয়ে আনার জন্য আবেদন করেন।

কেন এই অবস্থা?

স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক সত্য রায় বর্ধনের বক্তব্য, ইংরেজি মাধ্যম চালু করার সময় তাঁরা জানতেন, শিক্ষা দফতর থেকে শিক্ষক পাবেন। কিন্তু পরে তাঁরা শোনেন, স্কুলে যে শিক্ষকেরা ইতিমধ্যে আছেন তাঁদের দিয়ে এবং চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করে কাজ চালাতে হবে। তাঁর কথায়, “আমরা চুক্তির ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ করে ইংরেজি মাধ্যম চালু রাখার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু শিক্ষক পাওয়া যায়নি। ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছিল।” জেলা স্কুল পরিদর্শক মাধ্যমিক মিতালি দত্তের সঙ্গে যোগযোগ করা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement