প্রতীকী ছবি।
খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় নাম নেই এমন পরিযায়ী শ্রমিক ও দরিদ্রদের কুপনের মাধ্যমে রেশন দোকান থেকে বিনা মূল্যে দু’মাসের জন্য খাদ্যসামগ্রী বিলি করা শুরু হল মঙ্গলবার। খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় নাম না থাকায় লকডাউনের মধ্যে আয়হীন অবস্থাতেও তাঁরা সরকারি খাদ্য সামগ্রী পাচ্ছিলেন না। তাঁদের মাথা পিছু পাঁচ কেজি চাল এবং পরিবার পিছু দু কেজি ছোলা দেওয়া হবে। ৩০ জুনের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলির কাজ সম্পন্ন করতে হবে। তবে কিছু ব্লকে সে কাজ এখনও শুরু হয়নি। হরিহরপাড়ার উজ্জ্বল শাহ বলেন, ‘‘এতদিন চেয়েচিন্তে চলছিল। এ বার পরিবারের সকলের পেটে একটু ভাত ডাল পড়বে।’’
সেই সঙ্গেই এ দিন থেকে জেলায় যাঁদের রেশন কার্ড রয়েছে, এমন তিন ধরনের উপভোক্তাদের পরিবার পিছু ১ কেজি করে ডালও দেওয়া শুরু হয়েছে। চাল, ডাল ও ছোলার মান নিয়ে এ দিন জেলায় মানুষ মোটের উপরে সন্তুষ্ট। জেলা খাদ্য আধিকারিক সাধনকুমার পাঠক বলেন, ‘‘জেলায় ডাল বিতরণ নিয়ে কোনও অভিযোগ পাইনি।’’ কিন্তু, অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, কেন পরিবারপিছু ছোলা ও ডাল দেওয়া হচ্ছে। যেমন, হরিহরপাড়ার রুকুনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের শুভঙ্কর দাস বলছেন, ‘‘যে পরিবারে এক জন বা দু’জন করে রয়েছেন, তাঁরাও এক কেজি করে ডাল বা ছোলা পাচ্ছেন। আবার যে পরিবারে ছ’জন লোক, তাঁরাও একই পরিমাণ ডাল ও ছোলা পাচ্ছেন। এই নিয়ে অনেকের ক্ষোভ রয়েছে।’’ নওদা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষ খাদ্যসামগ্রী নিয়ে খুশি। কিন্তু অনেকেই বলছেন, ডাল ও ছোলার পরিমাণ বাড়ানো দরকার।’’ তাঁর কথায়, ‘‘অনেক পরিবার আবার ভেঙে আলাদা পরিবারও হয়েছে। যেমন কেউ বাবার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আলাদা সংসার পেতেছেন। সেক্ষেত্রে এই পরিবারপিছু খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হলে অসন্তোষ হচ্ছে।’’ জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধনকুমারবাবু বলেন, ‘‘দফতর থেকে যা বরাদ্দ করা হয়েছে, তাই দেওয়া হচ্ছে।’’
তিনি জানান, ৩০ জুনের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিলির কাজ সম্পন্ন করতে হবে।’’ খাদ্য সুরক্ষায় তালিকায় নাম নেই এমন উপভোক্তার সংখ্যা জেলায় দু’লক্ষ ছাড়াতে পারে বলে ধারণা দফতরের আধিকারিকদের।
দীর্ঘদিন ভিন্ রাজ্যে থাকার ফলে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের নাম খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় ওঠেনি। পাশাপাশি একাধিকবার আবেদন করেও খাদ্য সুরক্ষা তালিকায় নাম ওঠেনি অনেক উপভোক্তার। ডিজিট্যাল রেশন কার্ড না থাকায় এতদিন তাঁরা রেশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। করোনা আবহে লকডাউনের কারনে বন্ধ হয়েছে অনেকের রুটিরুজি। তাতে তাঁরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে খুবই খুশি। অনেকেই বলছেন, এ বার অন্তত রোজকার খাওয়াটা জুটবে।