কৃতী স্কুলকে সংবর্ধনা দেবে শিক্ষা দফতর

মুর্শিদাবাদের কৃতী স্কুলগুলিকে সংবর্ধিত করবে জেলা শিক্ষা দফতর। দফতর মনে করে, স্কুলগুলির ভুলত্রুটি দেখলে যখন তাদের তিরস্কার করা হয় তখন পিছিয়ে পড়া জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ভাল ফলাফলে বাহবাও দেওয়া উচিত! সে কথা ভেবেই ১৩ জুন বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে জেলার সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ পড়ুয়া উত্তীর্ণ হয়েছে এমন স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৫ ০১:২৫
Share:

মুর্শিদাবাদের কৃতী স্কুলগুলিকে সংবর্ধিত করবে জেলা শিক্ষা দফতর। দফতর মনে করে, স্কুলগুলির ভুলত্রুটি দেখলে যখন তাদের তিরস্কার করা হয় তখন পিছিয়ে পড়া জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ভাল ফলাফলে বাহবাও দেওয়া উচিত!

Advertisement

সে কথা ভেবেই ১৩ জুন বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে জেলার সব স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানেই ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ পড়ুয়া উত্তীর্ণ হয়েছে এমন স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকদের সংবর্ধনা দেওয়া হবে। একই ভাবে ডাকা হবে মাদ্রাসাগুলিকেও। হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় রাজ্যের মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে এ জেলার ছাত্রেরা। পুরষ্কৃত করা হবে তাদেরও।

শিক্ষা দফতরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শাসক ও বিরোধী শিক্ষক সংগঠনগুলিও। এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক দুলাল দত্ত বলেন, ‘‘এত দিন এই উদ্যোগ নেয়নি শিক্ষা দফতর। এখন দেরিতে হলেও তা শুরু হচ্ছে। এটা ভাল লক্ষণ।’’ এর ফলে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলি উৎসাহিত হবে এবং পুরষ্কৃত স্কুলের সুনাম হলে ছাত্রদের শহরের নামী স্কুলে যাওয়ার প্রবণতাও কমবে বলে মনে করেন তিনি। এত দিন শিক্ষা দফতর সংবর্ধনা না দিলেও সংগঠনের তরফে তা চালু ছিল মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সেই অনুষ্ঠান হবে ২০ জুন।’’

Advertisement

তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা শিক্ষা সেলের চেয়ারম্যান শেখ ফুরকান এ বার জেলায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তাঁর কথায়, মুর্শিদাবাদে শিক্ষার হার ৬৬.৫ শতাংশ। রাজ্যে ১৯টি জেলার মধ্যে ১৬ তম স্থানে মুর্শিদাবাদ। সুতি, সামশেরগঞ্জ শিক্ষায় আরও পিছিয়ে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলে দেখা যাচ্ছে গ্রামাঞ্চলের স্কুলগুলি এ বারে ভাল ফল করেছে। সাগরদিঘি, কাঞ্চনতলা, অরঙ্গাবাদ, সাহাপুর সাঁওতাল হাইস্কুল, বালিয়া, পাটিকাবাড়ি, আলি লষ্করপুরের মত স্কুলগুলিও ভাল ফল করেছে। ভাল ফলাফলের স্বীকৃতি পেলে স্কুলগুলি উৎসাহিত হবে। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষা দফতর এ ব্যাপারে উদ্যোগী হওয়ায় খুশি সকলেই।’’

জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, ‘‘স্কুলগুলিকে উৎসাহিত করাই মূল লক্ষ্য। সংবর্ধনা মঞ্চে সকলে একত্রিত হলে একে অন্যের সাফল্য, ঘাটতির কথা জানতে পারবেন। নানা মন্তব্য পরামর্শে উপকৃত হবেন সকলেই।’’

ইতিমধ্যেই ভাল ফল করেছে জঙ্গিপুর মহকুমার এমন স্কুলগুলিকে নিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করে দিয়েছেন শিক্ষা দফতর।

জঙ্গিপুরের সহকারি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক পঙ্কজ পাল জানান, কোনও এক জায়গায় ডেকে গতানুগতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কাউকে পুরষ্কৃত করা হচ্ছে না। এলাকার স্কুলে গিয়ে সেখানেই অনুষ্ঠান করবে শিক্ষা দফতর। শিক্ষা দফতরের কর্তারা সেখানে হাজির থাকবেন। অভিভাবকদের কাছে স্কুলের কৃতিত্বের কথা তুলে ধরতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ অভিভাবকদের স্কুলের প্রতি আগ্রহ ও ইনভলভমেন্ট বাড়ানো দরকার। ইতিমধ্যেই অরঙ্গাবাদ হাইস্কুলে ৪ জুন এই অনুষ্ঠান করা হয়েছে। গরমের ছুটি বেড়ে যাওয়ায় পরে অনুষ্ঠান হবে অন্য স্কুলগুলিতে। সেখানে কৃতী ছাত্রদেরও সংবর্ধনা জানানো হবে। এই সব কৃতিদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের বাবা কেউ রিকশাচালক, কেউ সব্জি বিক্রেতা কেউ বা দিনমজুর। স্কুলে আসবেন তাদের বাবা, মায়েরাও। কী ভাবে তাঁরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের এত অভাব ও কষ্টের মধ্যে মানুষ করে তুলেছেন, তাদের সেই কষ্টের কথা, সংগ্রামের কথা তাদের মুখ থেকেই তা শুনবেন অন্যান্য অভিভাবকরা। অন্যরাও তাতে অনুপ্রাণিত হবেন এই উদ্দেশ্য নিয়েই এই সব অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement