ফাইল চিত্র।
অনেক পুজো কমিটিই ইতিমধ্যেই মণ্ডপের সামনে নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে ব্যারিকেড তৈরি করেছেন। সেই সঙ্গে পুলিশের নজরদারি তো রয়েছেই। বিভিন্ন বড় পুজোর উদ্যোক্তারা নিজেদের স্বেচ্ছাসেবীদেরও বলেছেন ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে, কিন্তু তারই ফাঁক গলে কোনও কোনও বড় পুজোয় মণ্ডপে পর্যন্ত লোক ঢুকে যাচ্ছেন। ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বটতলা ভট্টাচার্যপাড়ার পুজোয় মণ্ডপের ভিতরে দর্শকদের দেখা গিয়েছে। কল্যাণ সঙ্ঘের মণ্ডপেও দর্শকদের আনাগোনা ছিল। এমন আরও কিছু পুজোতেও ব্যারিকেডের গণ্ডি পেরিয়ে লোকজন চলে আসছেন। তাতেই বেড়েছে কোভি়ড ছড়ানোর ভয়।
বটতলা ভট্টাচার্যপাড়া সর্বজনীনের সম্পাদক সুজয় সরকার বলেন, ‘‘দর্শকের আবেগকে সামলানো মুশকিল। তাঁরা নিষেধাজ্ঞা মানছেন না।’’ কল্যাণ সঙ্ঘের সম্পাদক পল্লব মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন করেছি। তবু কেউ যদি নো এন্ট্রি জ়োনে ঢুকে পড়ে তা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা খেয়াল রাখছি যাতে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়।’’
জেলার পুলিশ সুপার, কে শবরী রাজকুমার বলেন, ‘‘এত পুজোতে এত পুলিশ রাখা সম্ভব নয়। আমাদের পুলিশ ভ্যান সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোথাও আদালতের নির্দেশ অমান্য হচ্ছে দেখতে পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের তরফে প্রত্যেক পুজো কমিটিতে পুলিশ বুথ খোলা হয়েছে মানুষকে সাহায্য করার জন্য। সেখানে এ বছর শিশুদের জন্য পরিচয়পত্রের ব্যবস্থা করেছে পুলিশ।’’
অনেক পুজো হচ্ছে পাড়ার মধ্যে। পাড়ার সরু গলির ভিতর খাগড়ার স্বর্গধাম ক্লাবের পুজো ঘেরা মণ্ডপে হয় অন্য বছর। এ বছর খোলা রাখা হয়েছে মণ্ডপের চারপাশ। কিন্তু ষষ্ঠীর দিনেও পুজো উদ্যোক্তারা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেপে ব্যারিকেড দিতে পারেননি। ওই ক্লাবের পুজো উদ্যোক্তা অভিক চৌধুরি অবশ্য বলেন, “আজ সপ্তমীর মধ্যে সেই নির্দিষ্ট অঞ্চল আমরা ঘিরে দেব।” ভিড় এড়াতে ক্লাবের পক্ষ থেকে প্রবেশ ও প্রস্থানের দুটি আলাদা রাস্তা করলেও ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে চিন্তায় আছেন উদ্যোক্তারা। মধুপুরে জাতীয় সড়কের পাশেই হয় বাবুলবোনা সর্বজনীন পুজো কমিটির পুজো। ওই পুজো দেখতে প্রত্যেক বছর দীর্ঘ লাইন পড়ে মানুষের। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে জানান ওই পুজো উদ্যোক্তাদের একজন দিলীপ দত্ত। তিনি বলেন, “এ বছর হয়ত ১০ শতাংশ মানুষও প্রতিমা দেখতে আসবেন না।” তবু সংশয়ে তিনি। ভিড় হলে স্বেচ্ছাসেবকদের তা সামলানোর দায়িত্ব দেওয়া হবে বলে জানান উনি। সেক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবকরাও করোনা আক্রান্ত হতে পারে। দিলীপ বাবু বলেন, “স্বেচ্ছাসেবকরা করোনা ঠেকানোর প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিয়েই ভিড় সামলাতে নামবেন।”
মধুপুর বালার্ক সংঘের মত অনেক পুজো মণ্ডপ খোলামেলা জায়গায় হওয়ায় ভিড় সামলানোর জন্য আলাদা ব্যবস্থা রাখার দরকার নেই বলেই মনে করেন পুজো উদ্যোক্তারা।
চাপা আতঙ্ক নিয়ে মাঠে নেমেছে পুলিশও। এ সবের মধ্যে বৃষ্টির পুর্বাভাসও চিন্তায় রেখেছে উদ্যোক্তাদের।
জঙ্গিপুর মহকুমা পুলিশ আধিকারিক প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান জঙ্গিপুর মহকুমার সমস্ত পুজো মণ্ডপ ‘নো এন্টি জ়োন’ হিসাবে চিন্তিত করা হয়েছে। শহর জুরে শুরু হয়েছে যান নিয়ন্ত্রণ। সন্ধ্যা থেকে শহরে বন্ধ টুকটুক মোটরসাইকেল সহ সমস্ত রকমের যান চলাচল। শহর জুড়ে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে ভিড়।