স্কুলেই মত্তদের হাতে প্রহৃত হলেন রঘুনাথগঞ্জের বাড়ালা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। শনিবার দুপুরের ওই ঘটনায় স্কুলের কর্মী ও শিক্ষকেরা এক জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। তবে ধৃতের আরও তিন সঙ্গী পালিয়ে যায়। এই ঘটনায় স্কুল চত্বরে থাকা হস্টেলের ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে আবাসন ছেড়ে চলে যেতে চাইছে বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে।
ওই হস্টেলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ৫৪ জন ছাত্রী থাকে। অভিযোগ, দুষ্কৃতীরা প্রায়ই স্কুল ছুটির পরে স্কুলের একটি ঘরে ঢুকে মদের আসর বসায় ও ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৈফুদ্দিন শেখ জানাচ্ছেন, অভিযোগ পেলেও দুষ্কৃতীদের ধরা যাচ্ছিল না। ওরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল যে, শনিবার দ্বিতীয় ঘণ্টার ক্লাস চলাকালীন স্কুলের ঘরে ঢুকে পড়ে তারা।
প্রধান শিক্ষকের কথায়, ‘‘আমি তখন অফিসে কাজ করছিলাম। গ্রামের কয়েক জন বিশিষ্ট ব্যক্তি স্কুলে এসেছিলেন বিশেষ কাজে। তখনই খবর পাই, কয়েক জন দুষ্কৃতী স্কুলের ঘরে ঢুকে মদের আসর বসিয়েছে।’’ সঙ্গে সঙ্গেই কয়েকজন কর্মী ও শিক্ষককে নিয়ে সেখানে যান প্রধান শিক্ষক। তিনি দেখেন, জনা চারেক যুবক মদের আসর বসিয়েছে।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সবাই মিলে তাদের ধরতে গেলে দুষ্কৃতীরা রুখে দাঁড়ায়। এক জন প্রধান শিক্ষকের উপর চড়াও হয়। প্রধান শিক্ষক সৈফুদ্দিন শেখ বলেন, ‘‘আমাকে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়। এই সময় তিন জন দুষ্কৃতী পালিয়ে গেলেও এক জনকে ধরে ফেলেন স্কুলের শিক্ষকেরা। তাকে আটকে রেখে রঘুনাথগঞ্জ থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে তাকে গ্রেফতার করে।”
এর পরে স্কুলের কর্মী ও শিক্ষকেরাই প্রধান শিক্ষককে গ্রামেরই প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয় তাঁকে। স্কুল সংলগ্ন ছাত্রী আবাসনে ৫৪ জন ছাত্রী থাকে। সেখানে কোনও নিরাপত্তাকর্মী নেই। ভরসা বলতে সাকুল্যে এক জন নৈশরক্ষী।
ওই হস্টেলের ছাত্রীদের অভিযোগ, ‘‘প্রায়ই ওই দুষ্কৃতীরা আমাদের উত্ত্যক্ত করে। প্রতিবাদ করলে ভয় দেখায়। আমরা একাধিক বার প্রধান শিক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কিন্তু দুষ্কৃতীদের আনাগোনা বন্ধ করা যায় নি।’’
এ দিনের ঘটনার পরে ছাত্রীদের অনেকেই হস্টেল ছেড়ে চলে যেতে চাইছে। প্রধান শিক্ষক জানাচ্ছেন, পুলিশকে সব ঘটনা জানানো হয়েছে। সোমবার দুপুরে স্কুলে অভিভাবকদের একটি সভাও ডাকা হয়েছে। কারণ, আবাসনে থাকা মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়ে স্কুল কত্ৃপক্ষও চিন্তিত। নিরাপত্তার অভাবে েতাদের অনেকেই আবাসন ছেড়ে চলে যেতে চাইছে।