এই ট্রাক থেকেই মেলে সিগারেট। নিজস্ব চিত্র
চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই লরির উইন্ডস্ক্রিনে সাঁটানো ছিল ‘আর্মি অন ডিউটি’। যাতে কোনও ভাবেই সন্দেহ না হয়। কিন্তু, ওই লরির নম্বরটি আগে থেকেই চলে এসেছিল কেন্দ্রীয় শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে। গত মঙ্গলবার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে মুর্শিদাবাদের চাঁদের মোড়ে ওই লরিটি আটকে, তার ভিতর থেকে আড়াই কোটি টাকারও বেশি মূল্যের বিদেশি সিগারেট পাওয়া গিয়েছে। শুল্ক না দিয়ে যা চোরাপথে ভারতে ঢুকেছিল।
এই সিগারেট বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইনটেলিজেন্স (ডিআরআই)-এর অফিসারেরা ওই লরির চালক লক্ষ্মী নারায়ণকে গ্রেফতারও করেছে। নাগাল্যান্ডের রেজিস্ট্রি নম্বর লাগানো সেই লরি থেকে বাজেয়াপ্ত হয়েছে, মোট ২৬ লক্ষ ৯৯ হাজার ৯০০টি সিগারেট। যার বাজারদর ভারতীয় টাকায় ২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা। লরিটিকেও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
প্রধানত মায়ানমার এবং উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ায় তৈরি হয় এই সিগারেট। দেশের বাজারে যে সিগারেট বিক্রি হয়, ভারত সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সেই সিগারেটের প্যাকেটে বাধ্যতামূলক ভাবে ক্যানসার আক্রান্তের ছবি দিতে হয়। প্যাকেটের সিংহভাগ জুড়ে সেই ছবির মাধ্যমে মাদক বিরোধী প্রচার চালায় কেন্দ্রীয় সরকার। এই বিজ্ঞাপন ছাড়া বাকি অন্য সব সিগারেটই ভারতের বাজারে বেআইনি বলে গণ্য করা হয়।
কিন্তু, বিদেশ থেকে চোরাপথে আসা এই সব সিগারেটের প্যাকেটে সেই ছবি ছিল না। বিদেশ থেকে আসা সিগারেটের জন্য যে শুল্ক দেওয়ার কথা তাও এ ক্ষেত্রে ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে ডিআরআই অভিযোগ করেছে।
ডিআরআই সূত্রের খবর, মায়ানমার ও মনিপুরের সীমান্তে মোরে এলাকায় দিয়ে প্রধানত এই সিগারেট ভারতে ঢোকে। সেখান থেকে সড়কপথে প্রথমে অসমে যায়। এই লরিটি অসমের নওগাঁ থেকে সিগারেট তুলে নিয়ে আসছিল হাওড়ার ডানকুনিতে। সন্দেহ, সেখান থেকে এই চোরাই বিদেশি সিগারেট ছড়িয়ে পড়ার কথা ছিল কলকাতা সহ দেশের অন্যত্র। উইন, প্যারিস, রুইলি রিভার ছাড়াও বিশাল অঙ্কের এসে লাইট এবং এসে গোল্ড সিগারেট ছিল লরিতে।
চলতি আর্থিক বছরে এই ভাবে চোরা পথে ঢোকা প্রচুর বিদেশি সিগারেট বাজেয়াপ্ত করেছে ডিআরআই। কেন্দ্রীয় এই গোয়েন্দা বাহিনী সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত এই আর্থিক বছরে মোট ৬ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকার বেআইনি বিদেশি সিগারেট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।