ফাইল চিত্র।
নির্বাচনের সময় যত এগিয়ে আসছে ততই অস্বস্তি বাড়ছে শাসক দলের অন্দরে। অন্য দলগুলো যখন নির্বাচনকে সামনে রেখে ঘর গোছাতে শুরু করেছে, ঠিক সেই সময় শাসকদলের ঘর ভাঙার অবস্থা তৈরি হয়েছে জেলা জুড়ে। উঁচু তলার নেতাদের আকচাআকচিতে এখন অতিষ্ঠ নিচু তলার তৃণমূল কর্মী সমর্থকরা। তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে নেতাদের এই আকচাআকচির প্রভাব পড়বে।
জেলা তৃণমূলের এক নেতা বলছেন, জেলা নেতাদের বর্তমানে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে যে, একে অপরের মুখ দেখাদেখি পর্যন্ত বন্ধ হওয়ার জোগাড়। যেমন, রানিনগরের খুনের ঘটনায় যেখানে ব্লক তৃণমূল পুরোপুরি কংগ্রেসের ঘাড়ে দায় চাপিয়েছিল, সেটা খারিজ করে দিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি আবু তাহের খান।
কংগ্রেসের দাবি, আবু তাহের একেবারে ঠিক কথা বলেছেন। নিজেদের পোষা গুন্ডাদের মধ্যে গণ্ডগোলের জেরেই খুন হয়েছে রানিনগরের তৃণমূল কর্মী।রানিনগরের এক তৃণমূল কর্মী বলছেন, ‘‘দুই নেতার দুই মত। কর্মীরা কোন দিকে যাবেন? কার কথা বিশ্বাস করবেন? যা অবস্থা তৈরি হয়েছে তাতে আগামী দিনে ভোটের ময়দানে নামা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে আমাদের।’’ আর যার বিরুদ্ধে জেলা সভাপতি নানা অভিযোগ তুলছেন সেই তৃণমূল নেতা শাহ আলম সরকার বলছেন, ‘‘নিঃসন্দেহে উঁচুতলার নেতাদের আচরণ নিচু তলায় বড় প্রভাব ফেলবে। জেলা নেতৃত্ব আরও সংযত হওয়া প্রয়োজন। জেলা সভাপতি নিজের ভাগ্নেকে নেতা বানাতে গিয়ে দলের ক্ষতি করছেন।’’
যদিও জেলা সভাপতি তাঁর বক্তব্যে অনড়। আবু তাহের বলছেন, ‘‘সত্যটা সব সময় সামনা সামনি বলব, সে দলের লোক হোক বা বাইরের। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৃণমূলে এসেছি। দায়িত্বে থাকা পর্যন্ত কোনও রকমের নোংরামি বরদাস্ত করব না আমি।’’
রানিনগর ১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি এবং রানিনগর এক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের আমিনুল হাসান বলছেন, ‘‘গ্রামেগঞ্জে এখন একটা আওয়াজ উঠে গিয়েছে, সৌমিক যেখানে খুন হয় সেখানে। আমরা রাজ্য নেতৃত্বকে সৌমিক হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছি।"
সৌমিক অবশ্য বলেন, ‘‘দলের সৈনিক আমি, দল যে দায়িত্ব দেবে সেটা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে হাওয়ায় উড়ে আসা লোকজনদের কথায় কিছু যায় আসে না আমার।’’