ডোমকল পুরভবনে। নিজস্ব চিত্র
বিতর্কের মেঘ জমতেই ডোমকল পুরপ্রধানের ঘরে তালা।
নেম প্লেট বলছে— আহাদ সৌমিক হোসেন ‘আউট’!
যা দেখে এক বিরোধী কাউন্সিলর ঠোঁট উল্টে বলছেন, ‘‘কেবল পুরপ্রধানের চেম্বার থেকে নয়, ডোমকল থেকেই এ বার আউট হয়ে যাবে সৌমিক!’’
আর পাঁচটা দিনের মতো নয়, মঙ্গলবার থেকে থমথমে ডোমকল পুরসভা। লোকজনের আনাগোনা নেই। আনাগোনা বন্ধ সৌমিক অনুগামীদেরও। কার্যত ডোমকল পৌরসভার ভবন এখন দখলে ‘বিদ্রোহী’ ১৫ জন কাউন্সিলর ও তাঁদের সাঙ্গোপাঙ্গদের। এ দিনও দিন ভর দাপট ছিল তাঁদেরই। নিজেদের মধ্যে আলোচনা ছাড়াও খোশ মেজাজে আড্ডায় দিয়েছেন তাঁরা। স্বভাববিরুদ্ধ ভাবে জোরে কথা বলেছেন। অন্যদের শুনিয়ে শুনিয়ে বলেছেন, ‘কেউ এলে বলিস!’
কথায় কথায় এ দিন তাঁরা সকলেই কম বেশি দাবি করেছেন, পুরসভার লুট আর কাটমানির টাকা সব রয়েছে সৌমিকের চেম্বারে, আশঙ্কাও রয়েছে তাঁদের বলছেন, ‘‘যে কোনও সময় মোটা অঙ্কের টাকা মুড়ি-মুড়কির মতো ছড়িয়ে আমাদের কিনতেও চাইতে পারে ন সৌমিক!’’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিদ্রোহী কাউন্সিলর বলছেন, ‘‘যে অঙ্কের মাথা ঘোরানো টাকার টোপ দেওয়া হচ্ছে, তাতে বিকিকিনি করতে কতক্ষণ!’’ সেই জন্য বিদ্রোহীরা পরস্পরকে ‘চোখে চোখে’ রাখছেন বলেও দাবি করছেন তাঁরা। তৃণমূলের এক জেলা নেতা বলছেন, ‘‘সমস্যা তো ডালপালা ছড়িয়ে বাড়ছে। এখন তো বিদ্রোহীরা এ-ওকে সন্দেহ করবে। কি যে হবে কে জানে!’’
খুব বেশিদিন হয়নি, গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেও কংগ্রেস এবং সিপিএম থেকে বিভিন্ন নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কেনার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আর এ বার সেই অভিযোগ একেবারে তৃণমূলের অন্দরে। খোদ তৃণমূল পুরো প্রধানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের কেনার অভিযোগ তুলছে ওই দলেরই নেতা থেকে কাউন্সিলরেরা। ফলে বিরোধী দলের নেতারা এখন মুচকি হেসে একটাই কথা বলছেন, 'দেখ কেমন লাগে!'
কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, ‘‘দু’মাস আগেও আমরা আতঙ্কে থাকতাম, এ বার কাকে টোপ দেওয়া হবে। এখন তৃণমূল নেতারাই বুঝছেন, এ রোগ ছোঁয়াচে। আসলে আপনি যা করবেন তা ফিরে আসবে দ্বিগুন হয়ে!’’ সিপিএমের ডোমকল এরিয়া কমিটির সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলছেন, ‘‘নিজেদের খোঁড়া গর্তেই এখন পা পড়েছে তৃণমূলের।’’