ক্ষমাপ্রার্থী দুই ডাক্তার

অতিরিক্ত কাজের চাপের অভিযোগ জানিয়ে শক্তিনগরের দুই অস্থি চিকিৎসক অঞ্জন সেনগুপ্ত ও শঙ্কর রায় কিছু দিন আগে এক সঙ্গে ইস্তফা দিয়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০০:৪৩
Share:

—ফাইল চিত্র।

কর্তৃপক্ষের উপরে চাপ দিতে গিয়ে উল্টে নিজেরাই চাপে পড়ে গিয়েছেন তাঁরা। শেষ পর্যন্ত ক্ষমা চেয়ে কাজে যোগ দিয়েছেন শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের দুই অস্থি চিকিৎসক। যদিও তাতে তাঁদের চাকরির উপর তৈরি হওয়া অনিশ্চয়তা কাটেনি। শেষ পর্যন্ত তাঁদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হবে কিনা, সে সিদ্ধান্ত ঝুলে রয়েছে স্বাস্থ্য ভবনে।

Advertisement

অতিরিক্ত কাজের চাপের অভিযোগ জানিয়ে শক্তিনগরের দুই অস্থি চিকিৎসক অঞ্জন সেনগুপ্ত ও শঙ্কর রায় কিছু দিন আগে এক সঙ্গে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছিলেন, অতিরিক্ত একজন অস্থি চিকিৎসককে নিয়োগ না করলে তাঁরা আর কাজ করবেন না। ফলে হাসপাতালে অস্থি বিভাগের আউটডোর ও ইনডোর পরিষেবা থমকে যায়। জরুরি ভিত্তিতে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালের একমাত্র অস্থি চিকিৎসক সুমন্ত মণ্ডলকে ডিটেলমেন্টে শক্তিনগরে নিয়ে আসা হয়। তাতে আবার শান্তিপুরের পরিষেবা ব্যাহত হয়। তা নিয়ে সমালোচনা শুরু হতেই পরের দিন স্বাস্থ্য ভবন দিগন্ত মণ্ডল ও বিশ্বজিৎ সরকার নামে দুই অস্থি বিশেষজ্ঞকে শক্তিনগরে পাঠায়। এর পরই ইস্তফা দেওয়া দুই চিকিৎসক ফের কাজে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তাঁরা জানান, নতুন চিকিৎসক আনলে তাঁরা কাজে যোগ দেবেন বলে জানিয়েছিলেন। সেটাই করতে চান। কিন্তু এ বার বেঁকে বসে স্বাস্থ্য দফতর। শুরু হয় পাল্টা চাপ দেওয়া। চিকিৎসকদের ইস্তফা গৃহীত হবে কিনা এ ব্যাপারে তারা মুখে কুলুপ আঁটে। পাশাপাশি, কেন তাঁরা আচমকা কাজ বন্ধ করেছেন তা জানতে চেয়ে শো কজ করা হয়। শো কজের জবাবে দুই চিকিৎসক জানান, তাঁরা কাজের চাপে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে হাসপাতালের কাজে আসতে পারেননি, এবং তার জন্য তাঁরা ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এর পর দু’জনকে হাসপাতালে কাজে আসার অনুমতি দেওয়া হলেও জানিয়ে দেওয়া হয়, শেষ পর্যন্ত তাঁদের চাকরি থাকবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যভবন জানাবে। অর্থাৎ তাঁদের ভবিষ্যৎ অনির্দিষ্ট কালের জন্য ঝুলেই থাকল। হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলছেন, “ওঁরা ক্ষমা চেয়ে কাজে যোগ দিতে চেয়েছেন। আমরা সেই অনুমতি দিয়েছি। কিন্তু ওঁদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্যভবন।” হাসপাতাল সূত্রের খবর, এর পরই যে সব চিকিৎসকেরা কাজের চাপ নিয়ে অভিযোগ করতেন তাঁরা চুপ করে গিয়েছেন। হাসপাতালের একাংশের মতে, এটা প্রয়োজন ছিল। কারণ, কিছু চিকিৎসক কাজে ফাঁকি দিচ্ছিলেন এবং চিকিৎসকের অভাবের কথা বলে স্বাস্থ্য দফতরকে চাপ দিয়ে নিজেদের গাফিলতি ঢাকা দিতে চাইছিলেন। এখন তাঁরা শিক্ষা পেয়েছেন। যেমন কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ইস্তফা দেওয়া দুই চিকিৎসক ‘সি আর্ম’ নামের যন্ত্র না থাকার অজুহাত তুলে অস্ত্রোপচার করতেন না। সব রোগীকে রেফার করে দিতেন। যদিও অঞ্জনবাবুর দাবি, “এটা ঠিক কথা না। অস্ত্রোপচার আমরাও করেছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement