এই সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। নিজস্ব চিত্র
বছর সাতেক আগে নিয়মিত চিকিৎসক আসতেন হাসপাতালে। ওই চিকিৎসক অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়ার পর থেকে চিকিৎসকশূন্য হয়ে পড়ে খড়গ্রাম ব্লকের ইন্দ্রাণী প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। অথচ সেখানে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের রোগীরা নিয়মিত আসেন। এখন করোনাভাইরাসের আতঙ্কের মধ্যেও চিকিৎসক আসেন মাত্র এক দিন। কিন্তু তা-ও তিনি কবে আসবেন, িঠক নেই। ইন্দ্রাণী গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রাসিদা খাতুন বলেন, ‘‘এখন লকডাউন। সোকের যাতায়াতে সমস্যা রয়েছে। তাই চিকিৎসক কবে আসবেন, আগে থেকে জানতে না পারলে খুবই অসুবিধা হয়।’’ চিকিৎসক ছাড়া হাসপাতালে রয়েছেন এক জন ফার্মাসিস্ট, এক জন নার্স, এক জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। বস্তুত, তাঁরাই ভরসা জোগাচ্ছেন প্রায় ৩০টি গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ওই হাসপাতালে দিনে প্রায় তিনশো রোগী আসেন। একাধিক বার হাসপাতালে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগের দাবি জানানো হয়েছে, কিন্তু ব্লক স্বাস্থ্য দফতর উদ্যোগী হয়নি। নিয়মিত সকাল থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ওই হাসপাতালে শুধু বহিঃবিভাগে রোগী দেখা হয়। হাসপাতালে ফার্মাসিস্ট রোগীর কাছে তাঁর অসুবিধার কথা শোনার পর ওষুধ দেন। সে টুকুর জন্যই কৃষিপ্রধান ওই এলাকার বাসিন্দারা ফার্মাসিস্টের উপর নির্ভর করে রোগ নিয়ে ওই হাসপাতালে ভিড় করেন। আবার ফার্মাসিস্ট ছুটিতে থাকলে সেই সময় নার্স ওষুধ দেন রোগীদের। এমন নিয়মেই সাত বছর ধরে চলছে ইন্দ্রাণী হাসপাতাল। কিন্তু করোনাভাইরাসের পর থেকে ওই হাসপাতালে সপ্তাহে একদিন করে এক জন চিকিৎসক ওই হাসপাতালে আসেন। স্থানীয় বাসিন্দা আপেল শেখ ও সাইদুল শেখরা বলেন, “করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর থেকে গ্রামাঞ্চলের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তার একটাই কারণ চিকিৎসকের অভাব। প্রাথমিক ভাবে করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছে কি না, সেটা জানার জন্য আমাদের চিকিৎসকের পরিবর্তে ফার্মাসিস্ট, নার্সদের উপর নির্ভর করতে হবে ভেবে আতঙ্কিত হয়েছিলাম।”
যদিও পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের রাসিদা খাতুন বলেন, “আমি বহুবার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য দাবি জানিয়েছি। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবের কারণে আমাদের দাবি পূরণ হয়নি। কিন্তু এ বার করোনার কারণে একদিন চিকিৎসক আসছে তাতেই যা কিছুটা ভরসা পাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।” ওই হাসপাতালের গোপালি রঙের পোলেপ, আশেপাশের বেশ পরিস্কার আছে। কিন্তু চিকিৎসকের অভাবে যে ইন্দ্রাণী হাসপাতাল ধুঁকছে সেটা বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। খড়গ্রাম ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক নিত্যানন্দ গায়েন বলেন, “এখন মানুষের মনে আতঙ্ক কাটাতে সপ্তাহে একদিন করে ঝিল্লি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসককে ইন্দ্রাণী হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। পরবর্তীতে স্থায়ী চিকিৎসক নিয়োগের চেষ্টা করা হচ্ছে।”