শেষ আপ শান্তিপুর লোকালে তখনও ঘুমে আচ্ছন্ন অনেক যাত্রী। শনিবার রাতে রানাঘাটে। ছবি: সুদেব দাস।
অনুপম রায় গেয়েছিলেন— ‘শেষ ট্রেনে ঘরে ফিরব না..।’ রোজকার কাজ সেরে, রাতের শেষ ট্রেনে, ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফেরা মানুষগুলো অবশ্য মোটে তেমনটা করতে চাননি। তবে, রেলের সৌজন্যে তাঁদের বাড়ি ফেরা হল না শনিবার।
ঘটনাটি পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের। দিনের শেষ আপ শান্তিপুর লোকালের। ওই ট্রেনকে সে দিনের জন্য রানাঘাট পর্যন্ত চালানোর সিদ্ধান্ত নেন রেল কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই ঘটে বিপত্তি। প্রায় কুড়ি মিনিট দেরিতে, শনিবার রাত ১১টায় শিয়ালদহের সাত নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ৩১৫৪১ আপ শান্তিপুর লোকাল যাত্রা শুরু করে। রাত প্রায় ১২:৪০ নাগাদ ট্রেন এসে থামে রানাঘাট স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মে। রানাঘাট স্টেশনে ঘোষণা করা হয়— ‘আজকের জন্য আপ শান্তিপুর লোকালের যাত্রাপথ রানাঘাট পর্যন্ত। এই ট্রেন আর শান্তিপুর যাবে না। ট্রেনের যাত্রীদের অনুরোধ করা হচ্ছে, তাঁরা যেন ট্রেন থেকে নেমে যান’।
অত রাতে যানবাহন না পেয়ে রানাঘাট স্টেশনেই রাত কাটাতে হয়েছে শান্তিপুরের শেষ ট্রেনের যাত্রীদের। ট্রেনে ছিলেন শান্তিপুর শহরের বাসিন্দা বছর পঁয়ষট্টির ধীরেন বিশ্বাস ও তাঁর ছেলে ধ্রুবজ্যোতি বিশ্বাস। রাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বাবার চিকিৎসা করিয়ে শেষ ট্রেনে বাড়ি ফিরছিলেন ধ্রুবজ্যোতি। তিনি বলেন, ‘‘পরে রানাঘাটে এসে জানতে পারি এই ট্রেন আর শান্তিপুর যাবে না। রেলের ওই সিদ্ধান্তে চরম সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’’ ওই ট্রেনে ছিলেন ফুলিয়ার ছানা ব্যবসায়ী মিলন ঘোষ। তিনি বলেন, ‘‘মোবাইলে চার্জ নেই। ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাতে যে বাড়ি ফেরা হবে না, সে খবর বাড়িতে ফোন করে জানানোর পরিস্থিতি নেই। কেন শেষ ট্রেন শান্তিপুর পর্যন্ত চলবে না, তা রেলের তরফে আমাদের জানানো হয়নি।’’
রবিবার পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্রকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘রানাঘাটের পরে ওই ট্রেন কেন শান্তিপুর পর্যন্ত যায়নি, তা খোঁজ নিয়ে জানতে হবে। যাত্রীদের সমস্যায় পড়তে হোক, তা কখনওই আমরা চাই না।’’ এর দায়ভার কে নেবেন? সে প্রশ্নের সদুত্তর দেননি রেল কর্তৃপক্ষ।