—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
গাঁজার কারবারে নদিয়া পুরনো নাম। কিন্তু এখন কারবারের চরিত্রটা পাল্টে গিয়েছে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বড় গাঁজা মাফিয়ারা গাড়ি বোঝাই করে ‘মাল’ নিয়ে আসছে। তা ছোট ছোট পুরিয়ায় ভরে অনেক পরিবার জীবনধারণ করছে। গাঁজা কারবারের মানচিত্রে হরিণঘাটার মহাদেবপুর বিশেষ উল্লেখযোগ্য। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানকার আশুতোষ সরকার শুরু হয়েছিল ব্যবসা। তার স্ত্রীর নাম ভৈরবী। অনেকে আবার বলেন, ভৈরবীর বাবা রবি সাধুর হাত ধরে শুরু হয় এই কারবার। তবে ভৈরবীর হাতেই তা ফুলে-ফেঁপে ওঠে, সে-ই হয়ে ওঠে ‘মক্ষীরানি’। শোনা যায়, এক সময় আশুতোষ হঠাৎ সব ছেড়ে নিখোঁজ হয়ে যায়। কারবারের গোটা দায়িত্ব এসে পড়ে ভৈরবী ও তার শাগরেদ মিলন চাকি ওরফে মেরু, শঙ্করদের উপরে। কিন্তু পরে মেরুরা আলাদা ব্যবসা শুরু করে। তবে শঙ্কর ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, ভৈরবীর যোগ্য উত্তরসূরী হয়ে উঠেছে তার ছেলে আশিস। সেই সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা সুজন সরকারকেও তৈরি করেছে ভৈরবী। সে-ও তার ব্যবসার একটা বড় অংশ সামলাচ্ছে।গোয়েন্দারা অবশ্য দাবি করছেন, গত কয়েক বছর ধরে সুজন নিজের মতো করে ব্যবসা শুরু করেছে। সেই সঙ্গে মহাদেবপুরের হাঁড়িপাড়ার গফ্ফরও ব্যবসায় হাত পাকিয়েছে।
তবে দক্ষিণ নদিয়ার মতো উত্তরেও এখন গাঁজা কারবারের রমরমা বাড়ছে। দিন কয়েক আগেই কৃষ্ণগঞ্জের বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন বিজয়পুরে প্রচুর গাঁজা সহ-এক মহিলাকে ধরে বিএসএফ। কৃষ্ণনগর রোড স্টেশন এলাকায় একটি গাড়ি থেকে প্রায় ২২ কেজি ও ঘূর্ণিতে একটি স্কুটারের ভিতর থেকে পাঁচ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়।
কালীগঞ্জ থানার পানিঘাটায় জাতীয় সড়কে কন্টেনার বোঝাই প্রায় এক কুইন্টাল গাঁজা আটক করে পুলিশ। পলাশিতে একটি গাড়ি থেকে প্রায় ৪০ কেজি মেলে। এই সব ক্ষেত্রেই উত্তরবঙ্গ থেকে গাঁজা আসছিল। শিলিগুড়ি বা জলপাইগুড়ি থেকে কাঠের গুঁড়ির লরিতে বা জলের বোতলের পেটিতে ভরে এই গাঁজা পাচার করা হচ্ছে।
তবে সম্প্রতি ধুবুলিয়ার বাহাদুরপুরে ৩৪ নম্বব জাতীয় সড়কে একটি কন্টেনার আটক করে প্রায় দুশো কেজি গাঁজা ধরে পুলিশ। তদন্তে জানা যায়, মণিপুর বা অসম নয়, এই গাঁজা এসেছে ওড়িশা থেকে। ধৃতদের এক জনের বাড়ি আবার সেখানেই। অর্থাৎ চেনা ‘রুট’ পাল্টে গিয়েছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে বলেন, “গাঁজা পাচার রুখতে সর্বত্র নজরদারি চলছে।” (শেষ)