—প্রতীকী চিত্র।
রাসায়নিক সারের ভর্তুকি তলানিতে এসে দাঁড়িয়েছে। দ্বিতীয়ত রয়েছে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা। প্রয়োজনের তুলনায় বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে জমিতে সেচের জন্য খরচ ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। আনাজের দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে এই সব ব্যাখ্যাই দিচ্ছেন স্থানীয় চাষিরা। তাঁদের বক্তব্য, কয়েক মাস যাবত রাজ্য জুড়ে চলেছে তীব্র দাবদাহ। সেখানে এ জেলাও ব্যতিক্রম নয়। সেই সময় বহু আনাজের গাছ নষ্ট হয়ে যায়। তারই প্রতিফলন পরেছে বর্তমান আনাজের বাজার দরে, বলে তাঁরা দাবি করছেন।
পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি পটলের দাম ২০ টাকা যা খুচরো বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা। ঝিঙের পাইকারি দর ৪০-৪৫ টাকা যা খুচরো বাজারে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। তা ছাড়াও, পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি উচ্ছে ৬০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, লঙ্কা ১২০ টাকা। পাইকারি দর থেকে জেলার সব বাজারে খুচরো আনাজের দামের আনুপাতিক হার সহজেই অনুমেয়।
জিয়াগঞ্জের এক চাষি গৌতম মণ্ডল বলেন, “কয়েক বছর আগেও এক বিঘা জমিতে প্রতি তিন দিন অন্তর ১৫০ কেজি করে পটল পাওয়া যেত। বর্তমানে সেখানে বিঘা প্রতি ৭০ থেকে ৮০ কেজি পটল পাওয়া যাচ্ছে। প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা ও অনাবৃষ্টি, এর প্রধান কারণ। তা ছাড়াও জমির উর্বরতা ক্রমাগত কমছে।”
চাষি কার্তিক দাস বলেন, “রাসায়নিক সারের ভর্তুকি তলানিতে এসে দাঁড়িয়েছে। ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে ঘণ্টা প্রতি জমিতে সেচের খরচ গত কয়েক বছরে দ্বিগুণ হয়েছে। যেখানে আগে ঘণ্টা প্রতি একশো টাকা খরচ হত, এখন সেটা ঘণ্টা প্রতি দু’শো টাকা। জমির আগাছা পরিষ্কারের জন্য দিনমজুরের খরচও প্রতিনিয়ত ঊর্ধ্বমুখী।” তিনি আরও দাবি করেন, “আনাজের দাম বাড়লেও চাষির ঘরে মুনাফার অঙ্কটা আগের থেকে কমেছে, কোনও অংশে বাড়েনি।”
আজিমগঞ্জ আড়তের আনাজের কারবারী অতুল চন্দ্র সরকার বলেন, “প্রয়োজনের তুলনায় আনাজের জোগান কম রয়েছে। সেই কারণেই আনাজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বৃষ্টি হলে আগামী কিছু দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জেলা জুড়ে বৃষ্টি দেখা দিয়েছে। গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় শুক্রবার সকালে জল জমতে দেখা যায়। বৃষ্টির কারণে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বিভিন্ন আনাজের দাম স্বাভাবিক হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। পাশাপাশি লাগাতার কয়েক দিন বৃষ্টি হলে গাছে পচন রোগের সম্ভবনাও রয়েছে বলে জানাচ্ছেন চাষিদের একাংশ।