ডেঙ্গির মশা। —ফাইল চিত্র।
ইসলামপুরে ডেঙ্গি লাগামছাড়া রূপ নিয়েছে। বৃহস্পতিবার ও ইসলামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে জরুরি বিভাগে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা। প্রায় মাস খানেক থেকে ডেঙ্গি আক্রান্ত সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ইসলামপুরে। মৃত্যু হয়েছে একাধিক ব্যক্তির। প্রতিদিনই অসুস্থ হয়ে মানুষ ভর্তি হচ্ছেন হাসপাতালে।
সাধারণ মানুষ যেমন আঙুল তুলেছে পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের দিকে। পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাল্টা দাবি করা হচ্ছে, সাধারণ মানুষের অসচেতনতার জন্যই সমস্যা বাড়ছে। এমনকি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হাসপাতালে না এসে অনেকেই নিজে নিজে ওষুধ কিনে খাচ্ছেন বলে দাবি। তবে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা চাঁদা তুলে মাঠে নেমেছেন। নিজেরাই কামান দেগে মশা তাড়ানোর ব্যবস্থা করেছেন। তাঁদের দাবি, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে নিজেরা মাঠে না নামলে ইসলামপুর এলাকায় বেঁচে থাকা দায় হবে।
মঙ্গলবার ইসলামপুর নসিয়ৎ পাড়ার এক যুবকের মৃত্যু হয় ডেঙ্গিতে। আর তারপর থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক চরমে পৌঁছেছে। ওই এলাকার বাসিন্দা ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান সেলিম রেজা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি যে পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে তাতে ইসলামপুরে মহামারির আকার নিয়েছে ডেঙ্গি। পঞ্চায়েত প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই বিষয়টি নিয়ে। ফলে আমরা নিজেরাই চাঁদা তুলে ফগিং করছি। জঞ্জাল পরিষ্কার করে ছড়ানো হচ্ছে ব্লিচিং পাউডার।" তাঁর আরও দাবি, ‘‘এই সময়ে ইসলামপুর হাসপাতালে আরও বেশ কিছু চিকিৎসক প্রয়োজন। জরুরি বিভাগে এক জন চিকিৎসকের পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে।’’
ইসলামপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নেতাজি পার্ক ও নসিয়াৎ পাড়া এলাকায় ডেঙ্গির প্রভাব নিয়ে প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়েছিল অনেক আগেই। আর এ বার একের পর এক মৃত্যুর ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাথায় বাজ পড়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের একটা অংশের দাবি, অনেক বাড়িতেই ছাদে জল জমে আছে কি না দেখতে গেলেও বাধা দেওয়া হচ্ছে কর্মীদের। এমনকি চিকিৎসার ক্ষেত্রেও অনেক সময় বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে তাঁদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, ‘‘আমরা বেশ কিছু এলাকা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে আসছি, পরের দিন দেখা যাচ্ছে সেখানে আবারও জঞ্জাল জমা হচ্ছে। এমনকি প্রায় বাড়ির ছাদেই টবে জমে থাকছে জল। বলতে গেলে আমাদের উপরে চড়াও হচ্ছে বাড়ির মালিক।’’ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে পরিস্থিতি সামাল দিতে। পাড়ায় পাড়ায় ফিভার ক্যাম্প করা হচ্ছে।