—প্রতীকী চিত্র।
উত্তুরে হাওয়া বইতে শুরু করে দিয়েছে। শীত শীত ভাবে মশার উপদ্রব কমতে শুরু করেছে। যার জেরে জেলা জুড়ে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। তবে ডেঙ্গি নিয়ে উদ্বেগ এখনও যায়নি কয়েকটি ব্লক এলাকার সঙ্গে বহরমপুরেরও।
নভেম্বর মাসে ডেঙ্গির সংক্রমণ কমলেও সংক্রমণ পুরোপুরি থামেনি। দিন পনেরো আগে বহরমপুর শহরে সপ্তাহে ১০০ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন তা কমে সপ্তাহে ৫০ জন করে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।
অক্টোবরে বহরমপুর পুরসভা লাগোয়া লালদিঘিতে ডেঙ্গিতে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে। তবে বহরমপুর শহর কংগ্রেসের সভাপতি অরিন্দম দাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ও ডেঙ্গিতে মৃত্যুর সঠিক তথ্য সব সময় গোপন করে স্বাস্থ্য দফতর। বহরমপুর শহরে ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশি হচ্ছে। অথচ রিপোর্টে আক্রান্তের সংখ্যা কম করে দেখানো হচ্ছে। আমরা চাই, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
করা হোক।’’
বহরমপুরের পুরপ্রধান নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘গত বছর বহরমপুর শহরে প্রায় ১,২০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেখানে এ বছর ৪৮৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। অক্টোবর মাসে বহরমপুরে ২৭৩ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত ছিলেন। এ মাসে ৭২ জনের ডেঙ্গি হয়েছে। ক্রমেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘এখনও শহরের যে সব এলাকায় ডেঙ্গি হচ্ছে, সেখানে সব কিছু খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর লালগোলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ডেঙ্গি বেড়েছিল বহরমপুর শহরেও। এ বছর প্রথম দিকে বহরমপুর শহরে ডেঙ্গির সংক্রমণ কম থাকলেও সেপ্টেম্বর মাস থেকে তা বাড়তে শুরু করে। সেপ্টেম্বর মাসে এই শহরে ১০৬ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। অক্টোবরে ২৭৩ জন আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি একজনের মৃত্যু হয়। শীত পড়তে শুরু করলেও নভেম্বরের ৯ তারিখে ৭২ জন হয়ে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মাস শেষ হতে আরও ২০ দিন বাকি। ফলে বাকি দিনগুলিতে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
মুর্শিদাবাদ জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার সব জায়গাতেই ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা কমেছে। বর্তমানে জেলার মধ্যে সুতি ২ ব্লক, বহরমপুর পুরসভা, বেলডাঙা ১ ব্লক, জলঙ্গি, হরিহরপাড়া ও লালগোলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা
বেশি রয়েছে।
স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, প্রথম দিকে বহরমপুর পুরসভা এবং বেলডাঙা ১ ব্লক ও হরিহরপাড়ায় ডেঙ্গির প্রভাব কম থাকলেও মাসখানেক ধরে এই সব এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ বেশি দেখা দিচ্ছিল। দিন পনেরো আগে বহরমপুরে সপ্তাহে ১০০ জন করে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছিলেন। এখন তা কমে ৫০ জন হয়েছে। বহরমপুরের গোরাবাজার, লালদিঘির লাগোয়া এলাকা, খাগড়া, সৈদাবাদ-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ হচ্ছে। সূত্রের খবর, লালদিঘিপাড় এলাকায় ডেঙ্গির সংক্রমণ অনেকটা বেশি।
নাড়ুগোপাল বলেন, ‘‘লালদিঘিতে প্রচুর লোকজন রোজ নানা কাজে আসেন। সেই কারণে ডেঙ্গির সংক্রমণ বেশি হতে পারে। আমরা এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলে পদক্ষেপ করব।’’