—প্রতীকী চিত্র।
মুর্শিদাবাদে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। প্রতিদিনই মুর্শিদাবাদে একশো জনের উপরে ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। বহু ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগীকে ভর্তি করতে হচ্ছে হাসপাতালে। অনেকেরই ডেঙ্গির কারণে প্লেটলেটও কমে যাচ্ছে। যার জেরে ডেঙ্গি আক্রান্তদের জন্য জেলায় প্লেটলেটের চাহিদা বেড়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে যেখানে দু’এক ইউনিট প্লেটলেটের প্রয়োজন হত, এখন সেখানে দৈনিক ৩০-৩৫ ইউনিট প্লেটলেট লাগছে। এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় রক্ত কম রয়েছে। সেখানে প্লেটলেটের চাহিদা পূরণ হচ্ছে কী করে? প্লেটলেটের আকাল নেই তো? সেই প্রশ্নও উঠছে। যদিও মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে প্লেটলেট অভাব নেই।
শুক্রবার বিকেলের তথ্য অনুযায়ী মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৪২ জন ডেঙ্গি আক্রান্ত রোগী ভর্তি রয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। শুক্রবার বিকেলে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ অমিত কুমার দাঁ বলেন, ‘‘আগের থেকে প্লেটলেটের চাহিদা বেড়েছে এটা ঠিকই। তবে তার জন্য প্লেটলেট পাচ্ছে না, হাহাকার অবস্থা এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যাঁদের প্রয়োজন আমরা তাঁদের প্লেটলেট দিতে পারছি।’’
মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রের খবর, ডেঙ্গির জেরে রোগীর শরীরে প্লেটলেট কমে গেলে প্লেটলেট দেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত প্লেটলেটের অভাব নেই। যাঁদের প্লেটলেটের প্রয়োজন রয়েছে তাঁদের প্লেললেট দিতে পারছি।’’
মুর্শিদাবাদ জেলা সাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৮ হাজার ৩১০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছিলেন, মৃত্যু হয়েছিল ৫ জনের। এবারে যে ভাবে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্ত তাতে দিন পনেরোর মধ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত বছরকে ছাপিয়ে যাবে। এবছর জানুয়ারি থেকে এপর্যন্ত ৬৩০০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। ডেঙ্গিতে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। সুতি -২ ব্লক, বহরমপুর এবং বড়ঞা ব্লকে এক জন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের এ বছর মৃত্যু হয়েছে।
এবছর শহরকে ছাপিয়ে মুর্শিদাবাদের গ্রামীণ এলাকায় ডেঙ্গি দাপট দেখাচ্ছে। সুতি- ২ ব্লক ডেঙ্গি আক্রান্তের নিরিখে মুর্শিদাবাদের শীর্ষে রয়েছে। তার পরে রয়েছে ভগবানগোলা ১ ব্লক, লালগোলা ও জলঙ্গি ব্লক। অভিযোগ, উঠেছে গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় জঞ্জাল জমে থাকলেও তা ঠিকমতো পরিষ্কার হয় না। যার জেরে গ্রামীণ এলাকাতে ডেঙ্গি বাড়ছে।