প্রতীকী ছবি।
ভুল অস্ত্রোপচারের কারণে সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠল করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্ত চিকিৎসক নিরঞ্জন রায়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের কাছে আবেদন জানাল মৃত শিশুর পরিবার।
করিমপুরের সেনপাড়ার বাসিন্দা বিক্রম বিশ্বাস জানান, তাঁর স্ত্রী মৌসুমি বিশ্বাসকে গত ১৬ ডিসেম্বর করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেই সময় হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক নিরঞ্জন রায় জানান, হাসপাতালে তাঁর স্বাভাবিক প্রসব সম্ভব নয়। তিনি রোগীকে করিমপুরের বাথানপাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে বলেন। ওই দিন বিকেলে সেখানে নিরঞ্জন মৌসুমির সিজার করেন। বিক্রমের অভিযোগ, ভুল করে গর্ভের শিশুর পেটের নীচের অংশে নাড়ি ভুঁড়ি বেরিয়ে আসে। চিকিৎসক তখন জানান, পেটের ভিতরে বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি ছিল এবং শিশুকে বাইরে নিয়ে যেতে হবে। সেই মতো প্রসূতিকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে ওই শিশুকে নিয়ে কলকাতা এন আর এস হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকেরা শিশুকে মৃত ঘোষণা করেন। পরের দিন বেসরকারি হাসপাতালের ১৮ হাজার টাকা বিল পরিশোধ করে মৌসুমিকে হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। এখন তিনি বাড়িতে অসুস্থ এবং যন্ত্রণায় ভুগছেন।
বিক্রমের বক্তব্য, ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি আলোচনায় বসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। পরিবার থেকে জানানো হয়, লকডাউন চলাকালীন প্রথম থেকে ওই চিকিৎসকের কাছে প্রসূতিকে দেখানো হত। তাঁর কথা মতো তিন বার ইউএসজি করা হয়েছে এবং তাঁকে দেখানো হয়েছে। বাচ্চার জন্মগত ত্রুটি থাকলে আগে তিনি কেন বুঝতে পারলেন না বা জানালেন না? তাহলে ইউএসজি রিপোর্ট ভুল ছিল কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ভাবে বিপদে না পড়েন।
করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালের সুপার বলেন, ‘‘একটা অভিযোগপত্র জমা পড়েছে। সে ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। খতিয়ে দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’ অভিযুক্ত চিকিৎসক নিরঞ্জন রায় বলেন, ‘‘ওই মহিলা গত কয়েক মাস আমার কাছে চিকিৎসা করাচ্ছেন। তিন বারের ইউএসজি রিপোর্টে তাঁর সন্তান স্বাভাবিক বলেই জানা গিয়েছিল। কিন্তু সিজারের পর দেখা যায় গ্যাস্ট্রোকিয়াসিস রোগের জন্য বাচ্চার পেটের নাভি তৈরি হয়নি এবং তা শরীরের বাইরে ছিল। ফলে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।’’