প্রতীকী ছবি।
কল্যাণীতে মঙ্গল চৌধুরী নামে যে বিজেপি কর্মীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, তাঁকে মৃত্যুর আগে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিলেন দলেরই সহকর্মী বাবুলাল। কলকাতায় দলের রাজ্য দফতরে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে এমনই জানালেন মঙ্গলের দাদা মনোজ চৌধুরী।
গত বুধবার মঙ্গলের মৃত্যুর পর থেকেই বিজেপি অভিযোগ করে আসছে, ১৮ বছরের ওই যুবককে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের দলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। মঙ্গল সেই চাপে নতিস্বীকার না করায় তাঁকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই। কলকাতায় বিজেপির রাজ্য় দফতরে এ দিন মঙ্গলের মৃত্যুর দিনের ঘটনা পরম্পরার বিবরণ দিতে গিয়ে মনোজ বলেন, ‘‘সে দি রাতে ভাই যখন খেতে বসেছিল, তখন তার মোবাইলে একটা ফোন আসে। ফোন করেছিল ওর বন্ধু, বিজেপিরই কর্মী বাবুলাল। সেই ফোন পেয়েই ভাই মোটরবাইকে চড়ে বেরিয়ে যায়। তার পরে রাস্তার পাশে ওকে খুন করা হয়।’’ মঙ্গলের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁর পরিবার শম্ভু মাহাতো, মহাদেহব মাহাতো এবং জনক মাহাতো নামে তিন জনের বিরুদ্ধে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। মনোজের অভিযোগ, ওই তিন জন আগেও মঙ্গলকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিয়েছিল। কথা না শুনলে প্রাণনাশের হুমকিও দিয়েছিল তারা। বিষয়টি তখনও থানা-পুলিশে গড়িয়েছিল। তবে বাবুলালের বিরুদ্ধে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি মৃতের পরিবার। মনোজের বক্তব্য, ‘‘বাবুলালের বিষয়ে আমরা পুলিশকে মুখে বলেছি।’’
গত বৃহস্পতিবার মঙ্গলের বাড়িতে গিয়ে তাঁর পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু। এ দিনও সায়ন্তন অভিযোগ করেন, বিজেপি করার ‘অপরাধে’ তৃণমূলের হাতেই খুন হয়েছেন মঙ্গল। কিন্তু পুলিশ ‘সত্য’ আড়াল করতে বিষয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সায়ন্তনের পাশে বসে মঙ্গলের দাদা মনোজ বলেন, ‘‘আমার ভাইয়ের মৃতদেহের পাশে যে মোটরবাইকে ছিল, সেটাতে দুর্ঘটনার চিহ্ন ছিল না। সেটা কোথাও ভাঙেনি বা তুবড়েও যায়নি। অথচ, পুলিশ সেই বাইকই থানায় নিয়ে গিয়ে পরে আমাদের যখন দেখায়, তখন সেটা ভাঙাচোরা। অর্থাৎ পুলিশই ওটা ভেঙেছে দুর্ঘটনা বোঝাতে।’’ সায়ন্তনের বক্তব্য, মঙ্গলের মৃত্যুকে পুলিশ দুর্ঘটনা বলে চালাতে চাওয়ায় গ্রামবাসীরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। তখন বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধেই মামলা দেওয়া হয়েছে।
কল্যাণীর ব্লক তৃণমূল সভাপতি পঙ্কজ সিংহ বলেন, ‘‘যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের দু’জনই বিজেপি করে। ওই পরিবার পুলিশের কাছে মুখ খুললে এমন অনেকেই গ্রেফতার হবেন, যাঁরা
বিজেপির লোক।’’