সোমবার জেলায় বাস কিন্তু কম ছিল। নিজস্ব চিত্র
সোমবার সকালে রঘুনাথগঞ্জের ওমরপুর থেকে বাসে করে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন মিজানুর শেখ। তাঁর দাবি, ‘‘যাওয়ার সময় সকালে বাসের জন্য দাঁড়াতে হয়নি। বাসে লোকজনও কম ছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফেরার পথে বহরমপুর বাসস্ট্যান্ডে বাসের জন্য প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।’’ আবার সময় মতো বাস না পেয়ে সোমবার সকালে হরিহরপাড়ার চোঁয়া থেকে ট্রেকারে বহরমপুর আদালতে এসেছেন ল’ক্লার্ক মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় বাস কম। সে জন্য ট্রেকারে করে বহরমপুরে এসেছি।’’ হরিহরপাড়া বিডিও অফিসের কর্মী নওদার আমতলার মনিরুল ইসলাম আবার বন্ধুর মোটরবাইকে করে কর্মস্থলে পৌঁছন। তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় যানবাহন কম। ভিড় হবে ভেবে বন্ধুর মোটরবাইকে করে এসেছি।’’
অফিস-কাছারি খোলার পরে প্রথম দিন চুম্বকে এটাই যেন ছিল জেলার ছবি। বাস একেবারে নেই, তা নয়। কিন্তু কম। তাতেই দুর্ভোগ হয়েছে।
জেলা বাস মালিকদের সংগঠনের সূত্রে জানা গিয়েছে, মুর্শিদাবাদে প্রায় ৫৫০টি বেসরকারি বাস বিভিন্ন রুটে চলে। রবিবার পর্যন্ত জেলায় ১০-১৫ শতাংশ বেসরকারি বাস চলাচল করেছে। সোমবার থেকে তা বেড়ে প্রায় ৭০ শতাংশ হয়েছে। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শ্যামলকুমার সাহার দাবি, ‘‘জেলার সব রুটেই ৭০ শতাংশ বাস রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু যাত্রী কম থাকায় আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘লোকজন কম হবে জেনেই গণ পরিবহণ ব্যবস্থা সচল রাখতে বাস নামানো হয়েছে। তবে যে ভাবে জেলায় করোনার প্রভাব বাড়ছে তাতে আগামী দিনে রাস্তায় লোকজন কেমন বাড়বে বুঝতে পারছি না।’’
কান্দি মহকুমাকেও রাস্তায় বাস কম ছিল। কান্দির ব্যবসায়ী হীরন ত্রিবেদী বলেন, “বহরমপুর থেকে নিয়মিত যাতায়াত করে কান্দিতে ব্যবসা করি। বাসে বন্ধ থাকায় এতদিন দোকানে আসতে পারিনি। আজকে দোকান খুলতে পেরে খুব ভাল লাগছে।” কান্দি বাস সিন্ডিকেটের সহকারী সভাপতি ফুলু মিঁয়া বলেন, “আমরা পরীক্ষামূলক ভাবে ১০০ শতাংশ বাস চালিয়েছি। তাতে ক্ষতি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তাতে যদি যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পাই তাহলে বাস চালানো সম্ভব হবে। না হলে বাস বন্ধ রাখতে হবে।” বাস মালিকদের দাবি, বাসকর্মীদের মাস্ক, গ্লাভস, স্যানিটাইজ়ার দেওয়া হয়েছে। আসন যত, যাত্রী তত তোলা হয়েছে।
এনবিএসটিসি জেলায় অতিরিক্ত বাস চালিয়েছে। জেলার দু’টি রুটে তাদের বাস চলত। কিন্তু গত দু’সপ্তাহ থেকে জেলার অতিরিক্ত ১০টি রুটে বাস বেশি চালাচ্ছে। এ ছাড়া কলকাতা রুটে তারা অতিরিক্ত বাস চালাচ্ছে। জেলা থেকে কলকাতা ১১টি, রায়গঞ্জ পর্যন্ত তিনটি এবং মালদহ, বালুরঘাট, দুর্গাপুরেও একটি করে বাস গিয়েছে।