ডাকাতির পরে। নিজস্ব চিত্র
দুই শিশুর মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে বেশ কিছু সোনার গয়না ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে গেল দুষ্কৃতীরা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ ভীমপুর নতুনপাড়ার জনবহুল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, মোটরবাইকে এসেছিল দুষ্কৃতিরা। মুখ ঢাকা তিন জন বাড়ির ভিতরে ঢোকে। দু’জনের হাতে ছিল পিস্তল, এক জনের হাতে ধারালো অস্ত্র। দু’জন বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে ছিল। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।
কৃষ্ণনগর-মাজদিয়া রাজ্য সড়কের পাশেই খাদ্য সরবরাহ দফতরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রণজিৎ বিশ্বাসের বাড়ি। ঘটনার কিছু আগে তাঁর ছেলে রাজু ও বৌমা ভীমপুর বাজারে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ছিলেন রণজিৎ, তাঁর স্ত্রী শান্তিলতা আর মেয়ে শম্পা। রণজিৎ দোতলার ঘরে ছিলেন। নীচে সাত মাসের নাতি মেহুলকে নিয়ে বসে ছিলেন শান্তিলতা। আর এক বছরের ছেলে অদৃজর সঙ্গে ছিলেন শম্পা। মা- মেয়ে গল্প করছিলেন।
শান্তিলতার অভিযোগ, হঠাৎই দুষ্কৃতীরা ঘরে ঢোকে। তাঁর কথায়, “আমি নাতিকে কোলে নিয়ে বাইরের দরজা বন্ধ করতে গিয়েছি। সেই সময়ে এক জন ঢুকে আমার হাত চেপে ধরে। আমাদের একেবারে চুপ থাকতে বলে তারা। তার পরে আরও দু’জন ঢোকে। তাদের হাতে পিস্তল ছিল। দুই নাতির মাথায় পিস্তল ধরে আমাদের তারা জোর করে দোতলায় নিয়ে যায়।” তিনি জানান, ভয়ে তাঁরা কোনও রকম বাধাই দিতে পারেননি। ডাকাতেরা সচ্ছন্দে মা-মেয়ের গা থেকে গয়না খুলে নেয়।
রণজিতে অভিযোগ, ডাকাতেরা দোতলায় উঠে তাঁর বুকে ভোজালি ধরে আলমারির চাবি চান। কিন্তু চাবি ছিল বৌমা মিতালির কাছে। তা শুনে ডাকাতেরা ভোজালি দিয়ে আলমারির দরজা ভেঙে বেশ কিছু সোনার গয়না ও নগদ কয়েক হাজার টাকা নিয়ে নীচে নেমে যায়। দোতলায় দরজার কাছে ভোজালি হাতে এক জন দাঁড়িয়ে থাকে, যাতে বাড়ির কেউ নীচে নামতে বা চিৎকার করতে না পরে। নীচে রাজুর ঘরে ঢুকে আলমারি ভেঙে সোনার গয়না ও টাকা বের করে নেয় তারা। এর পরেই দোতলা থেকে নেমে যায় ভোজালি হাতে দুষ্কৃতী। বাইরে মোটরবাইক নিয়ে দু’জন দাঁড়িয়ে ছিল। দুষ্কৃতীরা তাতে চেপে পালিয়ে যায়। এর পরেই দোতলা থেকে তিন জন নেমে প্রতিবেশীদের ডাকাতির কথা জানান। ভীমপুর থানার পুলিশ এসে তদন্ত শুরু করে।
ঘটনাস্থল থেকে ভীমপুর বাজারের দূরত্ব মাত্র কিলোমিটার খানেক আর ভীমপুর থানা দুই কিলোমিটার মতো। পুলিশের দাবি, ভীমপুর এলাকাতেই তখন দুটো টহলদার গাড়ি ছিল। তবুও ভরসন্ধ্যায় জনবহুল এলাকায় দুষ্কৃতীরা বাড়িতে ঢুকে লুটপাট করায় এলাকার অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।