নষ্ট তিলখেত। দোগাছিতে।
ত্রাণবণ্টনে দুর্নীতি রুখতে সোশ্যাল মিডিয়ায় কড়া বার্তা দিলেন কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র।
শনিবার ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় মহুয়া বলেন, “এ রাজ্যে সামুদ্রিক ঝড়ে যাঁদের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের জন্য কুড়ি হাজার টাকা করে এককালীন আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ইতিমধ্যেই সেই টাকা বিভিন্ন জেলায় পৌঁছতে শুরু করেছে। নদিয়ায় টাকা পৌঁছেছে। আমি মানুষকে সতর্ক করছি, যদি কোনও ব্যক্তি আপনার কাছে এসে বলে দু’হাজার টাকা দাও, তাহলে তোমার নাম তালিকায় নথিভুক্ত করব – এমন কাউকে একটা পয়সা দেবেন না।’’
এ দিকে সামুদ্রিক ঝড় আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের জন্য যে আর্থিক সহায়তা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার, সেই অর্থও সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। গত শুক্রবার রাজ্যের কৃষি দফতরের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে এ জন্য আপাতত মোট দেড়শো কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে সরকার। আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত মোট ন’টি জেলার কৃষকদের জন্য মঞ্জুর করা দেড়শো কোটি টাকার মধ্যে নদিয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১৭ কোটি টাকা। ওই টাকা সরাসরি কৃষকদের অ্যাকাউন্টে
চলে যাবে।
ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা হিসেবে সবচেয়ে বেশি আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে উত্তর চব্বিশ পরগনাকে। তাদের দেওয়া হয়েছে ২৭ কোটি টাকা, এরপরই দক্ষিণ চব্বিশ পরগনাকে দেওয়া হয়েছে ২৬ কোটি টাকা। ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে সবচেয়ে কম আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ হয়েছে হাওড়ার জন্য। তারা পাচ্ছে পাঁচ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, বিভিন্ন জেলার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছে ওই আর্থিক সহায়তা সরাসরি পৌঁছে দেওয়া হবে। যে সমস্ত কৃষকের নাম ‘কৃষক বন্ধু’ প্রকল্পের মধ্যে ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত রয়েছে, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি আর্থিক সহায়তার অর্থ
পৌঁছে যাবে।
এই বিষয়ে নদিয়ার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) রঞ্জন রায়চৌধুরী বলেন, “এ জন্য কৃষকদের আলাদা করে কিছুই করতে হবে না। যাঁরা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে কৃষকবন্ধু প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন তাঁদের নাম সংশ্লিষ্ট জেলার কৃষি দফতর কেবল সুপারিশ করবে। তাঁদের অ্যাকাউন্টে সহায়তার অর্থ চলে যাবে।’’ তিনি জানান, এমনিতেই ওই প্রকল্পে কৃষকেরা বছরে দু’বার করে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকেন। সামুদ্রিক ঝড় আমপানের কারণে এই বছর আরও এক কিস্তি অতিরিক্ত সহায়তা রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দেওয়া হল। নদিয়া জেলায় প্রায় দেড় হাজার মৌজায় কমবেশি তিন লক্ষ কৃষক এতে উপকৃত হবেন বলে জানা গিয়েছে।
যদিও নিয়ম মতো ওই আর্থিক সহায়তা তাঁরাই পেতে সক্ষম, যাঁদের নিজের নামে জমি আছে। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া পৈতৃক জমিও যদি কৃষকের নিজের নামে নথিভুক্ত না হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে এই সহায়তা মিলবে না। সহায়তা পাবেন কেবলমাত্র নিজস্ব জমির মালিক। সে ক্ষেত্রে এই সহায়তা পাবেন না ভাগচাষিরাও। যদিও রাজ্যের চাষ আবাদের প্রায় পঞ্চাশ শতাংশই ভাগচাষিরা করে থাকেন। কিন্তু তাঁরা আর্থিক সহায়তা পাবেন না। নিজস্ব চিত্র