এক বৃদ্ধার দেওয়া একশো টাকা দেখাচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী। মঙ্গলবার বগুলায় বিজেপির জনসভায়। ছবি: প্রণব দেবনাথ
মাইকে তাঁর আসার কথা ঘোষণা হতেই উঠে দাঁড়াল গোটা মাঠ। সেই সঙ্গে কয়েক হাজার কণ্ঠে চিৎকার— গুরু! গুরু!
মঞ্চের রাস্তায় দু’পাশের বাঁশের ব্যারিকেডের পার থেকে সবাই এক বার তাঁকে ছুঁয়ে দেখতে চায়। বুধবার সেই ভিড় ঠেলে ‘মহাগুরু’ মিঠুন চক্রবর্তী যখন সভামঞ্চে উঠলেন, বগুলার মাঠে তখন বাঁধভাঙা ভিড়।
আর মাইক ধরে মিঠুন বললেন, “এত ভালবাসেন তো! কথা দিন, এত ভালবাসা ভোটের বাক্সে পড়বে!”
দিন পাঁচেক আগে বেথুয়াডহরিতে বেথুয়াডহরিতে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডার জনসভায় এর চেয়ে অনেক ছোট মাঠও ভরেনি। সেই সভায় দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীরাও হাজির ছিলেন। সেই মাঠে যেখানে বড় জোর আট হাজার মতো লোক ধরে, বগুলার এই মাঠে ধরে অন্তত হাজার বিশেক। সেই মাঠে এ দিন তিলধারণের জায়গা ছিল না। মাঠের বাইরেও কৃষ্ণনগর-বগুলা রাজ্য সড়ক থেকে শুরু করে পাশে বাড়ির ছাদেও লোকের ভিড়। রাজ্য সভাপতি সুকান্তও মঞ্চে হাজির ছিলেন।
দিন শেষে বিজেপি নেতারাও বলছেন, তাঁরা যা আশা করেছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশি ভিড় হয়েছে এ দিন। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, বেথুয়াডহরির সঙ্গে বগুলার ফারাত হয়ে গিয়েছে দুই জায়দায়। এক, একদা সুপারস্টার মিঠুনের ক্যারিশমা। দুই, নড্ডার সভা হয়েছিল তৃণমূলের হাতে থাকা উত্তর নদিয়া আর বগুলার সভা বিজেপি প্রভাবিত দক্ষিণে।
বিজেপি নেতাদের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই জনসভা আবার প্রমাণ করে দিল যে নদিয়া দক্ষিণে দলের জনভিত্তি এখনও কতটা অটুট। যদিও সে কথা মানতে নারাজ তৃণমূল। তাদের মতে, এ আসলে ‘মহাগুরু’ দেখার ভিড়। এর সঙ্গে ভোটের সম্পর্ক নেই। যদিও এই ভিড়ের ভিতরে মতুয়া ও উদ্বাস্তু মানুষের সমাবেশ সে কথা বলছে না বলে দাবি করছেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের মতে, গত লোকসভা ও বিধানসভা ভোটে এঁরাই তাঁদের ঢালাও ভোট দিয়েছিলেন।
বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়ের মতে, “এই ভিড়ই বলে দিচ্ছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনে কী হতে চলেছে। আমরা এখানে তৃণমূলকে নিশ্চিহ্ন করে দেব।” তৃণমূলের নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, “চিত্রতারকা এনে মাঠ ভরানো গেলেও ব্যালট বাক্স ভরানো যাবে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সঙ্গে মানুষ থাকবেন।”