সন্তানহারা: ভেঙে পড়েছেন নিহত বাবুলাল বিশ্বাসের মা-বাবা। রবিবার বাদকুল্লায়। নিজস্ব চিত্র
সকাল থেকে অঝোর ধারায় বৃষ্টি। তার মধ্যেই দলের কর্মী বাবুলাল বিশ্বাসের খুনের প্রতিবাদে পথে নামল সিপিএম। সকাল ৮টা নাগাদ বাদকুল্লার ধানহাটে দলীয় দফতর থেকে মিছিল শুরু করেন সিপিএমের নেতা-কর্মীরা। আশপাশের কিছু এলাকা ঘুরে ধানহাট মোড়ে কৃষ্ণনগর রানাঘাট রাজ্য সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে ছিলেন দলের তাহেরপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুপ্রতীপ রায়, জেলা কমিটির সদস্য সুকুমার চক্রবর্তী। প্রায় ঘণ্টাখানেক চলে অবরোধ। বিক্ষোভকারীরা দাবি করেন, পুলিশকর্তাদের এসে জানাতে হবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পরে ঘটনাস্থলে যান রানাঘাটের এসডিপিও লাল্টু হালদার। তিনি মাইকে ঘোষণা করেন, দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরপর অবরোধ ওঠে।
ততক্ষণে রীতিমতো ভিড় জমেছে বাদকুল্লা ২ পঞ্চায়েতে বাগদীপাড়ায় বাবুলালের বাড়িতে। ছোট উঠোন পার হয়ে তিন চার ধাপের সিঁড়ি টপকে ঢুকতে হয় ঘরে। সেখানেই মেঝের ওপরে উপুড় হয়ে পড়ে শিবানী বিশ্বাস। বাবুলালের মা। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলে চলেছেন, “আমার ছেলেটা তো কোনও দিন কারও ক্ষতি করেনি। তাহলে ওকে এভাবে মারল কেন? আমাদের এত বড় সর্বনাশটা কেন করল?” পাশের ঘরে একটা ছোট খাটে বসে বাবুলালের স্ত্রী মৌসুমী। তিন বছর আগে বিয়ে হয়েছে। মেয়ের বয়স এক বছর। মৌসুমী বলেন, “আমার স্বামী কারও সঙ্গেই অশান্তি করতেন না। বরং, সকলের পাশে দাঁড়াতেন। রাজনীতি করতেন, সেই কারণেই খুন হতে হল। তৃণমূলই আছে এর পিছনে।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন বাবুলাল। দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনিই বড়। ছোটভাই দেবাশিস এলাকার একটি দোকানে কাজ করেন। তাঁদের পরিবার প্রথম থেকেই সিপিএমের সমর্থক। বাবুলালের খুনের প্রতিবাদে এ দিন দুপুরে ফুলিয়ায় জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ডিওয়াইএফআই। বিকেলে বাবুলালের দেহ নিয়ে যাওয়া হয় তার বাড়িতে। খুনের প্রতিবাদে সিপিএমের তরফে সোমবার তাহেরপুর থানা এলাকায় বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জেলার সর্বত্র বিক্ষোভ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ১৬ সেপ্টেম্বর বাদকুল্লার ধানহাট বাজারে প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছে সিপিএম।