কাছাকাছি: ভোটের প্রচারে এক মঞ্চে সিপিএম ও কংগ্রেস নেতারা। শুক্রবার করিমপুরে। ছবি: কল্লোল প্রামাণিক
কংগ্রেসের একটা ভোটও যেন জোটের হয়ে দাঁড়ানো সিপিএম প্রার্থী ছাড়া আর কোথাও না যায় তার জন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে আবেদন জানালেন দলের প্রদেশ নেতৃত্ব।
শুক্রবার করিমপুরের নতিডাঙা মোড়ে জনসভায় বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, প্রদীপ ভট্টাচার্য, গৌরব গগৈ, বাম নেতা নরেন চট্টোপাধ্যায়েরা। সভার আগে বিমান বসু দুই দলের কর্মীদের নিয়ে মিছিল করেন। মার্কেট গেটে সিপিএম কার্যালয় থেকে জামতলা ও সেখান থেকে নতিডাঙা মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ হয়।
পরে তাঁর বক্তৃতায় সোমেন মিত্র মনে করিয়ে দেন, গত লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও সিপিএম দুই দল একক ভাবে লড়াই করেছিল। ভোটের ফল বলছে, রাজ্য ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করা কারও একার পক্ষে সম্ভব নয়। সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে দুই ধর্মনিরপেক্ষ দল এই উপনির্বাচনে জোট বেঁধেছে।
তবে বিজেপির মতো বাম-কংগ্রেস জোটেরও অভিযোগ, সভাস্থল দেওয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকা পুলিশ-প্রশাসন পক্ষপাত করছে। যে কারণে পুরনো বাসস্ট্যান্ডে জনসভার অনুমতি চাইলেও তা পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে সঙ্কীর্ণ জায়গায় সভা করতে হচ্ছে। সোমেনের অভিযোগ, ‘‘রাজ্যে যুবকদের চাকরি হয় না, কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য দাম পান না। জনগণের টাকা চুরি করার পরে সেই চোর ধরার জন্য যে আধিকারিক যুক্ত হলেন, তাদের বাঁচাতে এ রাজ্যের শাসক দল আন্দোলন করে। বিজেপির দিলীপ ঘোষ রামমন্দিরের কথা বলছেন, মমতা বলছেন সূর্যমন্দিরের কথা। কিন্তু চাকরি বা কাজের কথা কেউ বলছে না। ২৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প সংস্থা বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে।’’
বিমানের দাবি, তৃণমূল ও বিজেপি দুই পক্ষ মিথ্যা বলার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। দুই দলই ধর্মের রাজনীতি করছে। বিজেপির অমিত শাহ কাশ্মীর শান্ত বলে ঘোষণা করলেও সেখানে দোকানপাট বন্ধ, গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ থাকার কারণে আপেলের এই মরসুমে চাষিরা তাদের জমির আপেল ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পারছেন না। ভিলাই কারখানা বিজেপি বেচে দিতে চাইছে। বিজেপি সরকার কাজের কোনও সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। এ রাজ্যেও চাকরি নেই। সম কাজ সম বেতনের দাবিতে পার্শ্বশিক্ষকরা অনশন করছেন।’’ করিমপুরে ভোট লুট বন্ধ রুখে শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এ দিনই তৃণমূল প্রার্থীর হয়ে বালিয়াডাঙা স্কুল ময়দান, মহিষবাথান বাজার ও করিমপুর সিনেমা হল মোড়ে তিনটি সভা করেন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। বিজেপিকে ‘ফ্যাসিস্ট দল’ আখ্যা দিয়ে ব্রাত্য বলেন, ‘‘বিজেপি অসমে এনআরসি করে আগুন লাগাতে শুরু করেছে। ওদের দেশ গড়ার দিকে লক্ষ্য নেই। ওদের লক্ষ্য শুধু বিভাজনের রাজনীতি করা।’’