অরবিন্দ প্রামাণিক, সিপিএম প্রার্থী, নদিয়া, ছবি: প্রণব দেবনাথ
ভোটে হেরেছিলেন আগের দিন। পরের দিনই কীটনাশকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। শুক্রবার সকালে কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে মারা গেলেন শান্তিপুরের বেলগড়িয়া ১ পঞ্চায়েতের সিপিএম প্রার্থী অরবিন্দ প্রামাণিক (৬০)। এ বার তাঁর ছেলে দয়াল প্রামাণিক পঞ্চায়েত সমিতিতে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনিও হেরে গিয়েছেন।
শান্তিপুর থানার ২ নম্বর নতুন ফুলিয়ার বাসিন্দা অরবিন্দ প্রামাণিক এর আগে তিন বার সিপিএমের টিকিটে পঞ্চায়েত সদস্য হয়েছেন। এক বার শান্তিপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যও হন। ২০১৩ সালে শেষ বার তিনি পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেতেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে হেরে গিয়েছিলেন। এ বার ফের তাঁকে প্রার্থী করেছিল সিপিএম।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, অরবিন্দ এক সময়ে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করলেও পরে রাজনীতির টানে চাকরি ছেড়ে দেন। গৃহশিক্ষকতা করতেন। গত ১২ জুলাই বাড়ির কাছে রেললাইনের ধারে একটি কালভার্টের উপর বসে তিনি কীটনাশক খান বলে বাড়ির লোকজনের সন্দেহ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় দেখতে পেয়ে ফুলিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাঁকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে বৃহস্পতিবার জেএনএমে পাঠানো হয়েছিল।
দয়ালের দাবি, "২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সন্ত্রাস করে বাবাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তবে এ বার হেরে গিয়ে উনি মানসিক ভাবে খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। পারিবারিক কোনও অশান্তি ছিল না।" সিপিএমের ফুলিয়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক অনুপ ঘোষ বলেন, "আমাদের দলের দীর্ঘদিনের সৈনিক অরবিন্দ। এ রকম একটা ঘটনা ঘটে যাবে, আমরা ভাবতেও পারিনি। এটা আমাদের সকলের কাছেই বড় আঘাত। "
এ বার যে আসন থেকে অরবিন্দ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন সেখানে জিতেছেন তৃণমূলের চন্দন সরকার। দ্বিতীয় স্থানে আছে বিজেপি। তৃতীয় স্থানে ছিলেন অরবিন্দ। জয়ী চন্দন বলেন, "আলাদা দল করলেও ওঁর সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক ছিল। ভোটের দিনও কথা হয়েছে। এই মৃত্যু আমাকেও আঘাত দিয়েছে। শুধু রাজনীতির লড়াইতেই ওঁকে হারাতে চেয়েছিলাম, এ ভাবে নয়।"