—প্রতীকী চিত্র।
মুর্শিদাবাদে বাম–কংগ্রেসের বিরোধী জোট এখনও প্রশ্নের মুখে। পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ— তিন স্তরেই দু’ দলের আসনের অতিরিক্ত প্রার্থী থেকে যাওয়ায় বহু আসনে তারা নিজেদের মধ্যে লড়াই এড়াতে পারছে না। গ্রাম পঞ্চায়েতে ১,৬৯৫টি আসনে দু’পক্ষেরই প্রার্থী রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতেও ৪৬৭টি আসনে প্রার্থী রয়েছে দু’ দলের। অন্যদিকে, জেলা পরিষদের ৩০টি আসনে জোট হলেও বাকি ৪৮টি আসনে সরাসরি জোট করতে পারেনি বাম ও কংগ্রেস। সেক্ষেত্রে, দু’হাজারেরও বেশি আসনে শেষ পর্যন্ত একের বিরুদ্ধে এক ফর্মুলায় জোট হচ্ছে না, এটা ধরেই নেওয়া যায় বলে মনে করছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। যদিও দু’ দলেরই দাবি, কৌশলগত কারণেই সেগুলিতে এখনই জোট ঘোষণা হচ্ছে না।
বাম-কংগ্রেস দু’ দলেরই দাবি, প্রার্থীর সংখ্যা বেশি থাকলেও পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে আলাপ-আলোচনা করে জোট করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দু’ দলের স্থানীয় নেতৃত্বের উপর। সেই ভাবনা ১০০ শতাংশ সফল না হলেও যত বেশি সম্ভব আসনে যাতে জোট গড়া যায়, সেই আলোচনা চালিয়েযাচ্ছেন তাঁরা।
চূড়ান্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলা পরিষদের ৭৮টি আসনে কংগ্রেসের ৭২ এবং সিপিএমের ৪৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। ফরওয়ার্ড ব্লকেরও ৩টি আসনে প্রার্থী রয়েছে। দু’টি দলের হয়ে তিন জন করে ৬ জন প্রতিনিধি কয়েক দফা বৈঠক করেছেন জোট নিয়ে। একটি সূত্রে খবর, তাতে এ পর্যন্ত কংগ্রেস ও সিপিএম ১৫টি করে আসন একক ভাবে জোট করে লড়বে বলে সহমত হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতে বাম প্রার্থী রয়েছেন ৩,০৪২ জন। কংগ্রেসের প্রার্থী ৪,২৪৬ জন। অর্থাৎ, ৭,২৮৮ জন। আসনসংখ্যা ৫,৫৯৩। একই ভাবে পঞ্চায়েত সমিতিতে বাম প্রার্থী রয়েছেন ৫২৮ জন। কংগ্রেসের ৬৮৭ জন। অথচ, আসন ৭৪৮। এ দিকে, ভোটের আর বাকি দু’ সপ্তাহ।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, “সব আসনে জোট হয়নি। তবে প্রচার চলতে চলতেই হয়ে যাবে বলে আশা। আলোচনা হচ্ছে জেলা ও স্থানীয় স্তরে। নিজেদের মধ্যে লড়াই যতটা কমিয়ে আনা যায়, নিচুতলার কর্মীরাও সে ব্যাপারে সজাগ।’’
অন্যদিকে, কংগ্রেসের জেলার সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত দাস বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে জোট চূড়ান্ত হয়েছে। যদি কোথাও কিছু বেনিয়ম হয়, তা-ও মিটে যাবে। জেলা পরিষদে সমঝোতা হয়ে গিয়েছে দু’দলের। তবে ১৫-১৫ মোট ৩০টি আসনে। সেগুলিতে একটি প্রতীক জোট প্রার্থীর বলে বেছে নেওয়া হয়েছে। বাকি গুলিতে বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই হবে।’’ তবে কংগ্রেস ও সিপিএমের বাইরে কেউ কাউকে সমর্থন করলে দুই দলই তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে, জানান তিনি। জয়ন্তর দাবি, ‘‘যত দিন যাবে জোট আরও মসৃণ হবে।”