—প্রতীকী ছবি।
নিজের এক ব্যবসায়িক বন্ধু ও গাড়ির চালককে নিয়ে সুনসান রাস্তা দিয়ে গভীর রাতে বাড়ি ফিরছিলেন এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী। হঠাৎ তাঁদের পথ আটকে দাঁড়ায় দশ জনের একটি দুষ্কৃতী দল। গাড়ি থামিয়ে ছিনিয়ে নেওয়া হয় সোনা। বেধড়ক মারধর করা হয় গাড়ির চালক ও স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বন্ধুকে। ভয় দেখাতে শূন্যে তিন রাউন্ড গুলিও ছোড়ে দুষ্কৃতীরা। ঘটনার রাতে চাপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় ছ’জনকে। ধৃতদের হেফাজতে রেখে শুরু হয় বিচার প্রক্রিয়া। দীর্ঘ চার বছর পর বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে দশ বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নির্দেশ দিল কৃষ্ণনগর অতিরিক্ত বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী। নজিরবিহীন রায়ে স্বস্তি আক্রান্ত ব্যবসায়িক পরিবারে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষ্ণনগর থেকে করিমপুর পর্যন্ত একাধিক স্বর্ণ বিপণীতে সোনা সরবরাহ করতেন রাজু ঘোষ নামে এক ব্যবসায়ী। সাধারণত সন্ধ্যার পর নিজের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে খুচরা দোকানগুলিতে সোনা পৌঁছে দিতেন রাজু ও তাঁর এক ব্যবসায়িক বন্ধু সুজয়। ২০১৯ সালের অগস্ট মাসের ২০ তারিখে করিমপুর থেকে ফেরার পথে চাপড়া থানা এলাকার ৯ মাইল এলাকায় ওই ঘটনার পর ওই রাতেই চাপড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন রাজু। তদন্ত নেমে পুলিশ চাপড়া থানা এলাকার ছ’জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৯৫ ও ৪১২ ধারায় অভিযোগ এনে চাপড়া থানা এলাকার ছয় বাসিন্দা— মিলন শেখ, হালিম শেখ, মাইদুল শেখ, রাহুল শেখ ও সাজেদুল শেখের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করে পুলিশ। তদন্তকারী আধিকারিক, স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে মোট ২১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করে আদালত। দীর্ঘ সাক্ষ্য গ্রহণ প্রক্রিয়ার পর বুধবার অভিযুক্ত ছ’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগর জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত বিচারক সোমনাথ চক্রবর্তী অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা করে প্রত্যেকের জরিমানার নির্দেশ দেন।
সরকারপক্ষের আইনজীবী কুতুবুদ্দিন বিশ্বাস বলেন, ‘‘খুব অল্প সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ হওয়ার পর বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হল। অভিযুক্তদের পক্ষে যথেষ্ট সাক্ষ্য প্রমাণ আদালতের কাছে পেশ করতে পারায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হয়েছে।’’